গুয়াহাটি ঃ
সাংস্কৃতিক আইকন জুবিন গার্গের মৃত্যুকাণ্ডে বড় অগ্রগতি। আসাম পুলিশের বিশেষ তদন্ত দল (SIT) আজ গুয়াহাটির সিজেএম আদালতে ৩,৫০০ পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেছে। চারটি ট্রাঙ্কে ভরা নথিপত্র প্রায় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আদালতের সামনে দাখিল করা হয়।চার্জশিটে গ্রেফতার সাতজন আসামির মধ্যে চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ (BNS ধারা ১০৩) আনা হয়েছে।
এরা হলেন—উত্তর-পূর্ব ভারত উৎসবের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত, ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা, ড্রামার শেখরজ্যোতি গোস্বামী এবং সহগায়িকা অমৃত প্রভা মহন্ত। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
অন্যদিকে, জুবিনের কাজিন ও APS কর্মকর্তা সন্দীপন গার্গ–এর বিরুদ্ধে ধারা ১০৫ (খুন না হলেও দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে মৃত্যু) প্রয়োগ হয়েছে। তার দুই PSO—পরেশ বৈশ্য ও নন্দেশ্বর বরা–র বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট–এর অভিযোগ। SIT এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে রয়েছেন জুবিনের ম্যানেজার, তার চাচাতো ভাই এবং সিঙ্গাপুরে উৎসবের আয়োজক। তদন্ত চলাকালীন দলটি ৩০০-র বেশি ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে—যার মধ্যে তার পরিবারের সদস্য, বন্ধু, ব্যান্ডমেম্বার, ভক্ত এবং সিঙ্গাপুরে বসবাসরত অসমিয়া এনআরআই–সহ আরও অনেকে রয়েছেন।
অনুষ্ঠানে জুবিন গার্গ (ফাইল চিত্র )
জুবিন গার্গ গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে লাজারাস আইল্যান্ডের কাছে সাঁতার কাটতে গিয়ে মারা যান। ঘটনাটি নিয়ে দেশ জুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এটিকে প্রকাশ্যে “খুন” বলে উল্লেখ করেন।বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী শর্মা, যিনি প্রকাশ্যে বহুবার মৃত্যুকে খুন বলে মন্তব্য করেছেন, ঘোষণা করেন—“গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন তাকে হত্যা করেছে, বাকিরা তাকে সহায়তা করেছে।”চার্জশিট দাখিলের পর এখন মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপে এগোচ্ছে।
জুবিনের মৃত্যু এবং তার তদন্তের বিষয়টি চলমান লোকসভা অধিবেশন এবং সদ্য সমাপ্ত আসাম বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনেও উঠেছে।
এদিকে, সিঙ্গাপুর পুলিশ—যেখানে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল—তাদের নিজস্ব তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জানিয়েছে যে প্রাথমিক তদন্তে “ফাউল প্লের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।”