টালিগঞ্জ বক্স অফিসে শিহরণ তুলে বাংলাদেশে মূক্তির প্রহর গুনছে "ধূমকেতু "

Story by  atv | Posted by  Aparna Das • 6 d ago
টলিউড অভিনেতা দেব ও অভিনেত্রী শুভশ্রী
টলিউড অভিনেতা দেব ও অভিনেত্রী শুভশ্রী
 
কলকাতা , ১৯ আগস্ট ২০২৫
 
নয় বছর ধরে অপেক্ষার পর অবশেষে বড় পর্দায় দেখা মিলল দেব ও শুভশ্রী জুটির বহুপ্রতীক্ষিত ছবি ‘ধূমকেতু’। আর মুক্তি পেতেই যেন শুরু হলো একের পর এক বিস্ফোরণ, প্রথমে বক্স অফিসে, তারপর রাজনীতির ময়দানে।
 
এমন এক সময় যখন বাংলা সিনেমা লড়ছে দর্শক টানার জন্য, ‘ধূমকেতু’ যেন হয়ে উঠেছে নতুন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
 
 প্রথমেই বাজিমাত:
 
১৪ অগাস্ট মুক্তি পাওয়া কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের এই ছবিটি মাত্র চারদিনেই আয় করেছে ১০ কোটি টাকারও বেশি। শহর থেকে মফস্বল, মাল্টিপ্লেক্স থেকে সিঙ্গল স্ক্রিন, প্রতিটি হলেই দর্শকের ভিড় চোখে পড়ার মতো। এমনকী হৃতিক রোশনের মতো বলিউড সুপারস্টারের ছবির শো কমিয়ে ‘ধূমকেতু’-কে জায়গা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থা।
 
 বাংলাদেশে চাহিদা, তবে বাধা রাজনীতি
 
এই বিপুল সাফল্যের মধ্যেই বাংলাদেশ থেকেও উঁকি দিচ্ছে দর্শক আগ্রহ। বহু বাংলাদেশি দর্শক সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছে, তারাও ছবিটি দেখতে চান। সেই কথা মাথায় রেখে প্রযোজক রানা সরকার এক্স-এ (সাবেক টুইটার) বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে অনুরোধ জানান, ছবিটি সে দেশে মুক্তির অনুমতি দেওয়া হোক।
 
এই আবেদনে তিনি ট্যাগ করেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও খ্যাতনামা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকেও।
 
 রাজনৈতিক আগুনে ঘি ঢালল বিজেপি
 
এই আবেদনকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি। রাজ্য বিজেপি’র পক্ষ থেকে অভিযোগ ওঠে, প্রযোজকের আসল উদ্দেশ্য আর্থিক লাভ, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ তারা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে। এমনকি দেবের রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরেও কটাক্ষ করা হয়, “টিএমসির পোস্টারে মুখ, আর ইউনূসের পদলেহন, এই ছবি কি কেবল সিনেমা?”
 
 প্রযোজকের কড়া জবাব
 
রানা সরকার এই সমস্ত অভিযোগকে তীব্রভাবে নস্যাৎ করে বলেন, “আমার ব্যক্তিগত ভাবনা ও সিনেমার ভাবনা এক নয়। রাজনীতি করলে তো ওরা আগে বাংলাদেশে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করুক! তিস্তা, গঙ্গার জল দেওয়া বন্ধ করুক। সিনেমা সংস্কৃতি নিয়ে কথা বলার আগে নিজেদের মুখটা আয়নায় দেখুক।”
 
তিনি আরও জানান, দেব এখন বাংলা সিনেমার একটি মুখ, তাঁর ছবি আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছানো খুবই স্বাভাবিক।
 
রুদ্রনীলের কূটনৈতিক সুর

অভিনেতা ও বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ, যিনি ছবিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, তাঁর প্রতিক্রিয়া ছিল তুলনামূলকভাবে মেপে। তিনি বলেন, “ছবিটি আন্তর্জাতিক মানের। আমরা চাই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ুক। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে সিনেমা রপ্তানির নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। আবেগ দিয়ে সব হয় না। নিয়ম মেনেই এগোতে হবে।”
 
নতুন সপ্তাহে আরও শো, আরও দর্শক
 
এই মুহূর্তে ‘ধূমকেতু’ চলছে ১৫০-র বেশি হলে। প্রতিদিন বেড়েই চলেছে শো সংখ্যা। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ত্রিপুরার বিভিন্ন হলে ছবিটি রমরমিয়ে চলছে। পরের সপ্তাহে দেশের আরও রাজ্যে ছবিটি মুক্তি পাবে বলে খবর।
 
সিনেমা কেবল বিনোদন নয়, সমাজের আয়নাও বটে। ‘ধূমকেতু’ আপাতত সেই আয়নায় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং কূটনৈতিক সব প্রতিচ্ছবিই তুলে ধরছে। দর্শক কী দেখবেন, কোথায় দেখবেন, তা নির্ধারণের দায়িত্ব এখন কেবল প্রযোজকের নয়, দুই দেশের প্রশাসনের উপরও।