সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাদ্রাসাকেও আধুনিকীকরণকে গ্রহণ করতে হবে

Story by  atv | Posted by  Sudip sharma chowdhury • 3 d ago
প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি
প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি
 
মুহাম্মদ মোদাচ্ছির আশরাফী

মাদ্রাসা বা মক্তব মানে হলো বিদ্যালয়। যুক্তিগতভাবে,এটি ধর্মনিরপেক্ষ এবং কেবল শিক্ষাকেন্দ্রিক হওয়া উচিত। সুলতানি শাসনের সময় দিল্লিতে যখন প্রথম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এটি ছিল একটি আদর্শ বিদ্যালয়। সেই সময়ে মক্তব সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল।

সময় এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুগের পর যুগ ধরে এই বিদ্যালয়গুলি ইসলামিক শিক্ষার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর একমাত্র কারণ ছিল সমাজের নিম্ন স্তরের চিন্তাধারা। কঠোর ধর্মীয় বিষয়ে সীমাবদ্ধ মাদ্রাসাগুলি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে মাদ্রাসার আধুনিকীকরণ সমাজ এবং সরকার উভয়ের পক্ষেই একটি প্রয়োজনীয় বিষয়।
 

এক মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী

অষ্টম থেকে ত্রয়োদশ শতকের মধ্যে মুসলমানরা সংস্কৃতি, অর্থনীতি, শিক্ষা এবং বৌদ্ধিক বিকাশে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে। তারা ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়নের পরিবর্তে চিকিৎসা, অপটিক্স এবং ভাষাবিজ্ঞানের মতো আধুনিক বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণ করেছিল। ইসলামি পণ্ডিতরা সংস্কৃত, ফারসি এবং গ্রিক ভাষা থেকে নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করতেন। এইভাবেই জ্ঞান ও শিক্ষার একটি ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।

বাগদাদের বাইটুল হিকমা (জ্ঞান ও প্রজ্ঞা আহরণের একাডেমি) সমগ্র মহাদেশের ছাত্র-ছাত্রীদের আকর্ষণ করত। আল-খোয়ারিজমির মতো মুসলিম পণ্ডিত (যিনি অ্যালজেব্রার প্রতিষ্ঠাতা) এবং ইবনে আল-হাইথামের (আলোকবিজ্ঞানের পথপ্রদর্শক) মতো পণ্ডিতরা মুসলমানদের স্বর্ণযুগের প্রতীক ছিলেন।

এই সময়ে ধর্মতত্ত্বের জ্ঞান প্রচারের উদ্দেশ্যে মাদ্রাসা বা সেমিনারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মুক্ত এবং স্বাধীন বৌদ্ধিক অনুসন্ধানের জন্য পরিচিত স্থান বাইতুল হিকমা থেকে এই মাদ্রাসাগুলি অনুপ্রেরণা লাভ করেছিল। যখন মঙ্গোলীয়রা আরব ভূমি আক্রমণ করেছিল,তখন পণ্ডিতরা মধ্য এশিয়া ও ভারতে পালিয়ে আসে। ভারত সবসময়ই সকল সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় অনুশীলনের জন্য উন্মুক্ত ছিল। ভারতে পণ্ডিত এবং বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতিকে স্বাগত জানানো হয়েছিল,যার ফলে মাদ্রাসা (আরব ও তুর্কি শিক্ষাগত মডেলের সংমিশ্রণ) সারা দেশে বিস্তার লাভ করে এবং ছড়িয়ে পড়ে।

জম্মু ও কাশ্মীরের উদমপুরে এক মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রীরা ভোটদানের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করার এক দৃশ্য

সুলতানি যুগে (১২০৩-১২০৬) মাদ্রাসায় ধর্মীয়-সহ-আইনি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, আমলা ও পণ্ডিতদের জন্ম হয়েছিল। মুহাম্মদ ঘোরীর (আজমের) নামে যেমন বিভিন্ন শাসকের নামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কুতুবউদ্দিন আইবক এবং সুলতান ইলতুতমিশ দিল্লি, বদায়ুঁ এবং আশেপাশের অঞ্চলে মসজিদ ও মাদ্রাসা স্থাপন করেছিলেন।

দিল্লিতে বলবান ‘মাদ্রাসা-ই-নাসিরিয়া’ নামে একটি প্রসিদ্ধ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আলাউদ্দিন খিলজিকে উৎসর্গ করে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি দিল্লির ‘মকবরা-ই-আলাউদ্দিন খিলজি’ নামে পরিচিত। ছাত্র-ছাত্রীদের পানীয় জলের সুবিধার্থে এর পাশে ‘হাউজ-ই-খাস’ নামে একটি পুকুর খনন করা হয়েছিল। সুলতান ফিরোজ তুঘলকের দরবারে জিয়া উদ্দিন বর্ণী, মৌলানা জালাল উদ্দিন রুমি, কাজি আব্দুল কাদির, আজিজউদ্দিন খালিদ খানি প্রমুখ পণ্ডিত ছিলেন। তিনি সারা দেশে বহু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

সিকন্দর লোদি আরব,পারস্য এবং মধ্য এশিয়ার শিক্ষাবিদদের মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তিনি মথুরা ও আগ্রায় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আগ্রার মাদ্রাসায় অমুসলিমরাও ফারসি ভাষা অধ্যয়নের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করতেন। তিনি জোনপুর,আহমেদাবাদ,বিহার শরীফ,গুলবর্গা,বিদার,মান্ডু,দৌলতাবাদ এবং বাংলায় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জौनপুরের মাদ্রাসাকে “ভারতের শিরাজ” বলা হত।
 

বারাণসীর মাদ্রাসা জামিয়া আরব জিয়াউল উলুমের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে 'হর ঘর তিরঙ্গা' অভিযান উদযাপন করার এক দৃশ্য

এই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যুক্তিসম্মত পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে একটি শিক্ষামডেল বিকাশ করেছিল। বিদ্যালয়গুলোতে যুক্তিবিদ্যা, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা, কবিতা, ইতিহাস, ভূগোল, ন্যায়শাস্ত্র (ফিকহ) এবং ইসলামিক আইন ইত্যাদি বিষয় পড়ানো হতো। কিছু মাদ্রাসায় কলা শাখারও শ্রেণি পরিচালিত হতো এবং অটোমান সাম্রাজ্যের ধর্মীয় বিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে ইউরোপের বিদ্যালয়গুলোর বিনিময় কর্মসূচিও চালু ছিল।

এই মাদ্রাসাগুলোর বেশিরভাগই ধর্মীয় অনুদানের মাধ্যমে সমর্থিত ছিল এবং ভাড়াভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। প্রতিটি বড় শহরে মাদ্রাসার জন্য জমি বিনামূল্যে প্রদান করা হতো। এগুলো আখুন্ড (প্রধান শিক্ষক), মুদারিস (শিক্ষক) এবং মুত্তাওয়াল্লী (পরিচালক) দ্বারা পরিচালিত হতো। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে ছিল। শুধুমাত্র ধনী ছাত্র-ছাত্রীরা টিউশন ফি দিত, আর দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের জন্য কাজ করত এবং বিদ্যালয়ের দাতব্য প্রতিষ্ঠানের থেকে আর্থিক সাহায্য পেত। এই মাদ্রাসাগুলো ভারতীয়দের গণিত, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতিতে উন্নতিতে সাহায্য করেছিল।

মাদ্রাসাগুলো প্রথমে ইসলামিক আইন (ফিকহ) এবং কোরআন ও হাদীসের অধ্যয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করত। পরে ষোড়শ শতকে মোগল সম্রাট আকবর পাঠ্যক্রমে দর্শন ও যুক্তিবিদ্যার মতো বিষয় সংযোজন করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাদ্রাসাগুলো স্থানীয় শিক্ষাদানের ধাঁচের সাথে খাপ খাইয়ে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখা আধুনিকীকরণ এবং অন্তর্ভুক্ত করেছিল, যেমন ভারতে তারা ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। মোগল সাম্রাজ্যের অবনতির সঙ্গে সঙ্গে স্থবিরতা ও দুর্নীতি শুরু হয়। মাদ্রাসার প্রশাসকরা (মুয়াওয়ালি) শিক্ষার পরিবর্তে ব্যক্তিগত লাভকে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করেন এবং নিজেদের জন্য অনুদান সংগ্রহে মনোনিবেশ করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষামূলক স্পন্দন হারিয়ে মূলত ধর্মতত্ত্বের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে থাকে।
 

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি

ব্রিটিশ শাসনে স্থানীয় ভাষা ও মাদ্রাসা শিক্ষার অস্তিত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি হয়েছিল। ১৯৮৩ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অঞ্চলে পারস্য ভাষার পরিবর্তে ইংরেজিকে সরকারি ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে। কাজি ও উলামাদের পরিবর্তে ব্রিটিশ আইনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিচারকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। শরীয়াহ আইন মুসলিম শাসকেরা প্রচলন না করলেও, ব্রিটিশ শাসনের সময় মুসলিম আইনের প্রয়োগ ব্যক্তিগত বিষয়সমূহে সীমাবদ্ধ ছিল।

মাদ্রাসার আধুনিকীকরণের একটি বড় পদক্ষেপ ছিল ১৮৭৫ সালে স্যার সৈয়দ আহমেদ খানের দ্বারা মহম্মদ এংলো-অরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা। পরে এটি ১৯২০ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয় এবং ভারতীয় মুসলমানদের ঐতিহ্যবাহী সামন্ততান্ত্রিক ও ধর্মতাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে নিয়ে গিয়ে আধুনিক, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার প্রচার করে। সমাজের সংকোচ ও ঐতিহ্যবাহী উলামাদের প্রভাবের মধ্যেও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় আজও বিভিন্নভাবে সমাজ ও মাদ্রাসায় সংস্কার আনতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ওই সময়ের সরকার মাদ্রাসায় বিশেষ হস্তক্ষেপ করেনি। তবে শাহ বানো গোষ্ঠী সেটি পরিবর্তন করে মাদ্রাসা ও এর কার্যক্রমের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছিল।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে দরিদ্র পরিবারের জন্য মাদ্রাসাই একমাত্র বিকল্প ছিল। সেখানে উর্দু, আরবি, কোরআন মুখস্থ (হাফিজ) অন্তর্ভুক্ত পুরানো পাঠ্যক্রম পড়ানো হত এবং বিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজি ইত্যাদির সীমিত সংস্পর্শ ছিল। ২০০৬ সালের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাত্র ৯.৩৯ শতাংশ শিশু মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করত, যাদের অধিকাংশই নিম্নআয়ের পরিবার থেকে। অধিকাংশ ছাত্র আর্থিক চাপে ২০ বছর বয়সের আগে বিদ্যালয় ত্যাগ করে। তারা কেরালা, জয়পুর বা যোধপুরে পাড়ি দিয়ে নিম্নমানের শ্রমিক কাজ করেন।
 

শ্রেণীকক্ষে ছাত্রদের পাঠদান করার দৃশ্য

১৯৮৬ সালে ভারতে মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে বিজ্ঞান, গণিত, ভাষাসহ বিভিন্ন বিষয় সংযোজন করে আধুনিকীকরণের পরিকল্পনা প্রবর্তিত হয়। তবে সরকারি হস্তক্ষেপের আশঙ্কায় রক্ষণশীল গোষ্ঠীসমূহ প্রতিবাদ করে, যার ফলে অগ্রগতি খুব ধীরগতি হয়। ১৯৯৩ সালে পি ভি নরসিংহ রাওয়ের নেতৃত্বে ভারত সরকার মাদ্রাসার আধুনিকীকরণের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং এর পরবর্তী দাঙ্গার পর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তার অনুভূতি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ২০০২ সালের একটি স্মারকপত্রে রাষ্ট্রের তহবিল থেকে চলমান মাদ্রাসাগুলোকে "রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ" এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপ অংশীদারদের মধ্যে মতভেদের আরও গভীরতা আনতে সাহায্য করে।

২০০৯ সালের পরে কেন্দ্রীয় সরকার মাদ্রাসার পাঠ্যক্রমে অধিক ধর্মনিরপেক্ষ বিষয় সংযোজন করে আধুনিকীকরণের জন্য (মাদ্রাসা আধুনিকীকরণ) MOMS এবং (মাদ্রাসায় গুণগত শিক্ষা প্রদানের আঁচনি) SPQEM-এর মতো পদক্ষেপ শুরু করে। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুসলিম যুবক-যুবতীদের ঐতিহ্যগত জ্ঞান ও আধুনিক দক্ষতার সঙ্গে সজ্জিত করার পক্ষে ছিলেন। তবে এর স্পষ্ট ফলাফল সীমিত ছিল। কিছু রাজ্য মাদ্রাসাগুলোকে স্বীকৃতি না দেওয়ার বা ইসলামিক বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে, যা সাংস্কৃতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

জামিয়াতুর রাজা (বারেলি),আল-জামিয়াতুল আসরাফিয়া (আজমগড়),এবং নদওয়াতুল উলমা (লখনৌ) এর মতো বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ধর্মীয় শিক্ষাকে আধুনিক শিক্ষার শাখার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এর বিপরীতে ছোট ছোট স্বাধীন মাদ্রাসাগুলো, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে অবস্থিত মাদ্রাসাগুলো সীমিত সম্পদের কারণে এই পরিবর্তন করতে সমস্যায় পড়েছে।
 
 
 

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি

বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাদ্রাসায় শুধুমাত্র আধুনিক বিষয় সংযোজন করাই যথেষ্ট নয়। প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও নবীন পাঠদান পদ্ধতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলপ্রসূ সংস্কারের জন্য পরম্পরা ও উদ্ভাবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সরকার, মাদ্রাসা বোর্ড এবং নাগরিক সমাজের মধ্যে সহযোগিতাও প্রয়োজন। ভারতের মাদ্রাসাগুলোর আধুনিকীকরণের জন্য নীতি নির্ধারক, শিক্ষাবিদ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। অর্থনৈতিক বৈষম্য ও পাঠ্যক্রমের ব্যবধান দূর করে মাদ্রাসাগুলো প্রান্তীয় মুসলমানদের শক্তিশালী করার একটি সামগ্রিক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে পারে।

সংখ্যালঘু পরিক্রমা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে ২৪,০১০টি মাদ্রাসা রয়েছে, যার মধ্যে ৪,৮৭৮টি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে স্বীকৃতি লাভ করেনি। তাদের তালিকায় ৭-১৯ বছর বয়সী মুসলিম শিশুর সংখ্যা ৪% বা তার কম। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ প্রান্তীয় জনগোষ্ঠীর উন্নতির জন্য শিক্ষা উদারীকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। এই নীতির লক্ষ্য হলো মাদ্রাসাগুলোকে মূল শিক্ষাব্যবস্থায় আনা। একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্বজুড়ে বহু মাদ্রাসায় আধুনিক পাঠ্যক্রম একত্রিত করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সিঙ্গাপুরের মাদ্রাসাগুলো ট্যাবলেট ও এআই পাঠ্যক্রমের মতো প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে। ভারতীয় মাদ্রাসাগুলোও প্রাসঙ্গিক থাকতে একই রকম আধুনিকীকরণ গ্রহণ করলে ভবিষ্যতে লাভবান হবে।