কেরালার ত্রিশূরের শান্ত পরিবেশে এক অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাগিয়ে তুলছেন একজন মানুষ, অনমপিল্লি মুহাম্মদ ফাইজী। তাঁর প্রতিষ্ঠিত শরিয়ত অ্যান্ড অ্যাডভান্সড স্টাডিজ একাডেমি আজ শুধু ইসলামী জ্ঞানের পাঠশালা নয়, বরং এক বহুমাত্রিক শিক্ষাঙ্গন যেখানে ইসলামিক গ্রন্থের পাশাপাশি সংস্কৃত ভাষা ও বেদান্ত দর্শনও পড়ানো হয়।
একাডেমির অধ্যক্ষ ফাইজী নিজেই শ্রী শঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়, কালাডি-র সংস্কৃত বিভাগের একজন পণ্ডিত। তাঁর স্বপ্ন ছিল সংস্কৃত সাহিত্যে গবেষণা করা, যা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। এই একাডেমি সম্বন্ধে বলতে গেলে সমস্তা নামটি উচ্চারণ করতেই হয়, সুফি সুন্নি আলেমদের সংগঠন, যারা এক দশক আগে এই একাডেমি শুরু করে। তবে এর পাঠক্রম নতুনভাবে সাজান ফাইজী। কয়েক বছর আগে তিনি পাঠক্রমে বাধ্যতামূলকভাবে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য অন্তর্ভুক্ত করেন।
অনমপিল্লি মুহাম্মদ ফাইজী তাঁর বক্তৃতা দেওয়া একটি মুহূর্তে
শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণির পর ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এখানে প্রবেশ করে। এরপর তারা ইন্টারমিডিয়েট, ডিগ্রি এবং স্নাতকোত্তর পড়াশোনা সম্পন্ন করে ইসলামী শিক্ষায়, যেখানে সংস্কৃত একটি বাধ্যতামূলক বিষয় হিসেবে পড়তে হয়।ফাইজীর যুক্তি স্পষ্ট, “শিক্ষা মানে কেবল নিজের ঘরানার জ্ঞান নয়, বরং সবকিছুকে জানতে শেখা। সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি মানুষকে অন্ধ করে দেয়।”
কোরআন ও উপনিষদ নিয়ে বক্তৃতা দেওয়াও তাঁর কাজের অংশ। তিনি মনে করেন আধুনিক বিদ্যালয়ে মূল্যবোধভিত্তিক শিক্ষা থাকা উচিত এবং ধর্ম আসলে কী শিক্ষা দেয় সে বিষয়ে লজ্জা না পেয়ে আলোচনা করা উচিত। তাঁর কথায়, “মূল্যবোধহীন শিক্ষা আসলে ফাঁপা।”
ত্রিশূরের শরিয়ত অ্যান্ড অ্যাডভান্সড স্টাডিজ একাডেমি
অনমপিল্লি শুধু জ্ঞান গ্রহণে উদার নন, তিনি বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে একই মঞ্চে আনার ক্ষেত্রেও উদ্যোক্তার ভূমিকা নিয়েছেন। তিনি কেরালায় CCC (কাউন্সিল ফর কমিউনিটি কোঅপারেশন)-এর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন।