নয়া দিল্লি
বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু হিসেবে স্বীকৃত হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতুটি চীন আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছে। গুইঝৌ প্রদেশের একটি গিরিখাতের উপর ৬২৫ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই বিস্ময়কর স্থাপনাটি চীনের অন্যতম দর্শনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করেছে। এই সেতুটি হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের দুই প্রান্তের মধ্যে দুই ঘণ্টার যাত্রাকে মাত্র দুই মিনিটে বদলে দিয়েছে।
গত মাসে সেতুটির গঠনগত স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে কঠোর পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। একদল ইঞ্জিনিয়ার সেতুটিতে লোড টেস্ট করেন,যেখানে কৌশলগত স্থানগুলোতে ৯৬টি ট্রাক রাখা হয়,যাতে ভারী যান -বাহন চলাচলের পরিস্থিতির বাস্তবিক অনুমান করা যায়। ৪০০-রও বেশি সেন্সরের মাধ্যমে সেতুর মূল স্প্যান,টাওয়ার, কেবল ও সাসপেনশনগুলির সামান্যতম পরিবর্তনও নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মাধ্যমে এর গঠনগত অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
হুয়াজিয়াং গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন সেতু এখন গড়েছে দুটি সম্মানজনক রেকর্ড: বিশ্বের সর্বোচ্চ সেতু এবং পাহাড়ি অঞ্চলে নির্মিত সর্ববৃহৎ স্প্যান সেতু।এই সেতুটি শুধু একটি পরিবহন কেন্দ্রবিন্দুই নয়, বরং পর্যটকদের জন্যও একটি প্রধান আকর্ষণ। এখানে রয়েছে ২০৭ মিটার দীর্ঘ একটি দর্শনীয় লিফট, একটি স্কাই ক্যাফে, এবং নিচের গভীর গিরিখাতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যাবলি উপভোগের সুযোগ।উল্লেখযোগ্য ,সেতুটির মোট দৈর্ঘ্য ২৯০০ মিটার, মূল স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৪২০ মিটার এবং এটি ক্যানিয়নের তলদেশ থেকে ৬২৫ মিটার উপরে অবস্থিত।
গুইঝৌ ট্রান্সপোর্টেশন ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড-এর প্রকল্প পরিচালক উ ঝাওমিং সেতু নির্মাণকালীন সময়ে সম্মুখীন হওয়া নানা চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:বিশাল পরিমাণ কংক্রিট ঢালাইয়ের সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ,গিরিখাতের খাড় ঢাল স্থিতিশীল রাখা,এবং প্রবল বাতাসের প্রভাব কমানো ইত্যাদি।
এইসব চ্যালেঞ্জের মধ্যেও প্রকল্প দলটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করেছে,যার ফলস্বরূপ পাহাড়ি অঞ্চলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্প্যান সেতুর নির্মাণ সম্ভব হয়েছে।উল্লেখযোগ্যভাবে,চীন বিশ্বব্যাপী সেতু র্যাংকিংয়ে আধিপত্য বজায় রেখেছে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি সর্বোচ্চ সেতুর মধ্যে ৮টিই ইতিমধ্যে চালু হয়েছে এবং সবকটিই গুইঝৌ প্রদেশে অবস্থিত।