এবার বঙ্গে লজ্জিত গায়িকা! ‘জাগো মা’ নয় ‘সেকুলার গা’ দাবি, গাইতে গিয়ে প্রায় মারের মুখে গায়িকা লগ্নজিতা

Story by  atv | Posted by  Sudip sharma chowdhury • 7 d ago
গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী (ফাইল চিত্র)
গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী (ফাইল চিত্র)

কলকাতা ঃ

গানের অনুষ্ঠানে হেনস্তার শিকার গায়িকা লগ্নজিতা চক্রবর্তী! পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে ঝামেলা। অভিযোগ, ‘জাগো মা’, গানে আপত্তি তোলেন আয়োজকরা। দাবি করেন গাইতে হবে ‘ধর্মনিরপেক্ষ গান’। তা থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন গায়িকাঘটনায় মূল অভিযুক্ত মেহবুব মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা গিয়েছে, শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর সাউথ পয়েন্ট পাবলিক স্কুলে গানের অনুষ্ঠান ছিল লগ্নজিতার। সেই অনুষ্ঠানে কয়েকটি গান গাওয়ার পর, ‘জাগো মা’ গানটি গাওয়া শুরু করেন গায়িকাঅভিযোগ, আপত্তি জানান স্কুলের অন্যতম মালিক মেহবুব মালিক। তাঁর দাবি, ধর্মনিরপেক্ষ গান গাইতে হবে। অভিযোগ, সেই সময় মেহবুব মঞ্চে উঠে গায়িকাকে মারধর করতে যান। এরপরই গায়িকার পক্ষ থেকে ভগবানপুর থানায় একটি অভিযোগ জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানের আয়োজক স্বার্থক ভট্টাচার্য বলেন, “লগ্নজিতা চক্রবর্তী ৬-৭টি গান গাওয়ার পরে দেবী চৌধুরানী সিনেমার ‘জাগো মা’ গানটি গাইছিলেন। সেই সময় ভগবানপুরের সাউথ পয়েন্ট পাবলিক স্কুলের মালিক মেহেবুব মালিক মঞ্চে উঠে শিল্পীকে মারধর করতে যান। তাঁর দাবি, সেকুলার গান হোক। এসব গান চলবে না। ভরা মঞ্চে হেনস্তা করা হয় শিল্পীকে। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে ওকে গ্রেপ্তার করুক।”

লগ্নজিতা বলেন, “আমার জাগো মা গানটি গাওয়ার সময় মেহবুব মালিক স্টেজে উঠে আসেন। মারমুখী হয়ে ওঠেন। বলা হয় সেকুলার গান গাইতে। ঝামেলা হওয়ার পর স্কুলের লোকেরা ওকে সরিয়ে নিয়ে যায়। আমি থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।” শিল্পীর কণ্ঠরোধের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়ে মেহবুব মালিকের ভাই মাসুদ মালিক বলেন, “মঞ্চে লগ্নজিতা একটি ধর্মীয় গান গাইছিলেন, সেই সময় তাঁকে আবেদন করে বলা হয় সেকুলার গান গাইতে।”

এই ঘটনাপর পর সরব হয়েছে বিজেপি। শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “জেহাদিরা ঠিক করবে কী গান গাইবে। ব্যবস্থা নেওয়া হোক। না হলে আমরা আন্দোলনে নামব।” তৃণমূলকে বিঁধে অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “এক মহিলা শিল্পীর উপর আপনার নেতারা যে অন্যায় করছে, তার প্রতিবাদ করলে স্পষ্ট করে বলুন। বাংলার মানুষ জবাব চাইছেন।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “এটা আমার বাংলা নয়। এই বাংলাকে আমরা চিনি না। কেন গান বেছে দেওয়া হবে। কেন হেনস্তার শিকার হতে হবে? সতর্ক হওয়ার সময় এসেছে।” তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ বিশ্বাস এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “ওটা একটি বেসরকারি স্কুলের অনুষ্ঠান ছিল। বিরোধীদের স্বভাব তৃণমূলকে টেনে আনা। নিন্দনীয় ঘটনাপুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।”

ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশাহ হক বলেন, “স্কুলের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই সময় একটা ঝামেলা হয়েছে। অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে বলেন, “স্কুলের মালিক অভিযুক্ত মেহবুব মল্লিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে পেশ করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে। ভগবানপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। এসডিও পর্যায়ের আধিকারিক তদন্ত করছেন।”