মধ্যপ্রদেশে দান করা রক্ত সঞ্চালনের পর ৫ শিশু এইচআইভি পজিটিভ

Story by  atv | Posted by  Sudip sharma chowdhury • 9 d ago
মধ্যপ্রদেশে দান করা রক্ত সঞ্চালনের পর ৫ শিশু এইচআইভি পজিটিভ
মধ্যপ্রদেশে দান করা রক্ত সঞ্চালনের পর ৫ শিশু এইচআইভি পজিটিভ

সাতনা

একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ভারতের মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলায় থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ছয় শিশু মানব ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি)-এ সংক্রমিত হয়েছে। জানা গেছে, সাতনার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রক্ত সঞ্চালনের সময় শিশুদের এইচআইভি-আক্রান্ত রক্ত দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনা দেশের রক্তব্যাংক ব্যবস্থাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে এবং ব্যবস্থাগত ব্যর্থতা ও প্রশাসনিক অব্যবস্থার গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

এই ঘটনা এমন এক সময় সামনে এল, যখন কয়েক মাস আগেই ঝাড়খণ্ডের একটি সরকারি হাসপাতালে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে কয়েকজন শিশু এইচআইভি-তে আক্রান্ত হয়েছিল।

থ্যালাসেমিয়া মেজর—একটি জিনগত রক্তরোগ যাতে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হয়—এ আক্রান্ত এই শিশুদের মোট ১৮৯ ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়েছিল। এই রক্ত তিনটি ভিন্ন রক্তব্যাংক থেকে সংগ্রহ করা হয়, যার ফলে তারা ১৫০ জনেরও বেশি দাতার রক্তের সংস্পর্শে আসে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।

আরও জানা গেছে, আয়ুষ্মান ভারত-এর সিইও ও আইএএস আধিকারিক ড. যোগেশ ভরসতের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে দাতার রক্তের মাধ্যমেই শিশুদের শরীরে এইচআইভি সংক্রমিত হয়েছে।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর জনস্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দপ্তর তৎপরতা দেখিয়ে অবিলম্বে একটি রক্তব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং দুইজন ল্যাব টেকনিশিয়ানকে বরখাস্ত করেছে। একই সঙ্গে সাতনা জেলা হাসপাতালের প্রাক্তন সিভিল সার্জন মনোজ শুক্লাকে এই গুরুতর ভুলের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

ভারতে প্রতি বছর আনুমানিক ১২,০০০ শিশু থ্যালাসেমিয়া মেজর নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এটি ট্রান্সফিউশন-ডিপেনডেন্ট থ্যালাসেমিয়া (TDT) নামেও পরিচিত। এই রোগে হিমোগ্লোবিনের অভাব বা ত্রুটির কারণে মারাত্মক রক্তাল্পতা দেখা দেয় এবং নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন অপরিহার্য হয়ে ওঠে।এ ধরনের ঘটনা সামনে আসায় আশঙ্কা করা হচ্ছে, সারা দেশে বহু শিশু নীরবে রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে ছড়ানো সংক্রমণ নিয়ে জীবনযাপন করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে এখনও বহু রক্তব্যাংকে এইচআইভি শনাক্তকরণের জন্য তৃতীয় প্রজন্মের ELISA পরীক্ষা ব্যবহার করা হয়, যা একটি পুরনো স্ক্রিনিং পদ্ধতি। এই পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৯০ দিনের একটি ‘বায়োলজিক্যাল উইন্ডো পিরিয়ড’ থাকে—এই সময়ের মধ্যে সংক্রমিত দাতা নেগেটিভ ফল দেখাতে পারেন। তাই অবিলম্বে আরও উন্নত পরীক্ষাপদ্ধতিতে আপগ্রেড করা অত্যন্ত জরুরি।