গুয়াহাটিঃ
ভারত জাতীয় ক্রিকেট দল বনাম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল,এশিয়া কাপ ২০২৫ (Asia Cup 2025)-এর সুপার ফোর ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয়। গতকাল, ২৪ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ,মুখোমুখি হয় ভারত বনাম বাংলাদেশ। যেখানে ভারত সুপার ৪-এ বাংলাদেশকে ৪১ রানে পরাজিত করে হাতে একটি ম্যাচ রেখে ২০২৫ এশিয়া কাপের ফাইনালে তাদের স্থান নিশ্চিত করেছে।
এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচটি ছিল কার্যত সেমিফাইনাল। সেই মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ১৬৯ রানের লক্ষ্য রাখে সূর্যকুমারের ভারত। জবাবে মাত্র ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে ৪১ রানে জয় পেয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল টিম ইন্ডিয়া।বুধবার টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক। জাকের আলির এই সিদ্ধান্ত কার্যত বুমেরাংয়ে পরিণত হয়। কারণটা অবশ্য অভিষেক শর্মা। তাঁর মারমুখী মেজাজের সামনে রীতিমতো পরিত্রাহি অবস্থা হয় বাংলাদেশি বোলারদের। বাঁ-হাতি ওপেনার রান আউট হন ৩৭ বলে ৭৫ রানের মারকাটারি ইনিংস খেলে। তিনি ফিরতেই ভারতের রানের গতিও কমে যায়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। ব্যর্থ হন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব (৫), তিলক বর্মারা (৫)। শেষের দিকে হার্দিক পাণ্ডিয়া (৩৮) এবং অক্ষর প্যাটেলের (১০) সৌজন্যে ১৬৮ রানে তোলে ভারত। তবে, সঞ্জু স্যামসনের মতো ক্রিকেটারকে উপরের সারিতে ব্যাট করতে না পাঠানোয় গম্ভীর এবং সূর্যকুমারের রণনীতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।
ভারতের দেওয়া ১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। জশপ্রীত বুমরাহ ফেরান তানজিদ হাসানকে (১)। প্রথম দিকে বুমরাহকে সামলাতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল বাংলাদেশি ব্যাটারদের। তবে বাংলাদেশকে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন সইফ হাসান এবং পারভেজ হোসেন ইমন। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৪৪ রান। যখন এই জুটিকে বিপজ্জনক মনে হচ্ছিল, ঠিক সেই সময় পরিত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ কুলদীপ যাদব। সইফ-ইমনের ৪২ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। ব্যক্তিগত ২১ রানের মাথায় ফেরেন ইমন।
তাওহিদ হৃদয়ের ইনিংসও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তাঁকে ৭ রানে ফেরান অক্ষর প্যাটেল। শামিম হোসেন (০)-কে শূন্যে বোল্ড করেন বরুণ চক্রবর্তী। লিটন না থাকায় এদিন অধিনায়কত্বের সুযোগ পেয়েছিলেন জাকের আলি। নেতৃত্বের ‘ক্ষণ’ সুখকর হয়নি। তাঁকে রান আউট করল ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের একটু নিখুঁত থ্রো। এরপর রিশাদ (২) এবং তানজিমকে (০) টানা দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছিলেন কুলদীপ। সেই নজির অবশ্য হয়নি। উইকেটের অন্য প্রান্তে একা কুম্ভের মতো লড়ে গেলেও বাংলাদেশকে জেতাতে পারলেন না ওপেনার সইফ হাসান। বুমরাহর বলে তিনি আউট হলেন ৬৯ রানে। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিতে পারলেন না কোনও বাংলাদেশি ব্যাটার। শেষমেশ বাংলাদেশের ইনিংস থামল ১২৭ রানে।
ভারতের পক্ষে কুলদীপ যাদবের শিকার ৩ উইকেট। বুমরাহ এবং বরুণ চক্রবর্তী পান ২টি উইকেট। অক্ষর প্যাটেল এবং তিলক বর্মা নেন ১ উইকেট। তবে, পাকিস্তান ম্যাচের পর সুপার ফোরের এই ম্যাচেও বেশ কিছু ক্যাচ মিস হল ভারতের। ফাইনালের আগে মিডল অর্ডার তো বটেই, ক্যাচ মিসের প্রবণতাও কিন্তু চিন্তায় রাখবে ভারতীয় শিবিরকে। বাংলাদেশ হেরে গেলেও তাদের সামনে ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ থাকছে। বৃহস্পতিবার মুস্তাফিজুরদের সামনে পাকিস্তান। বিজয়ী দল পাবে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ভারতের সঙ্গে ফাইনাল খেলার সুযোগ। তার আগে অবশ্য শুক্রবার কার্যত নিয়মরক্ষার ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি ভারত। গ্রুপ পর্বে সাড়া জাগিয়ে শুরু করা লঙ্কান বাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় সরকারিভাবে বিদায় নিল এবারের এশিয়া কাপ থেকে।