অস্টোলক্ষীর আরাধনায় ২৫বছর ধরে সাধনা করছেন শাহ মোঃ ফরিদ
Story by atv | Posted by Aparna Das • 1 Months ago
শাহ মোঃ ফরিদ
সুদীপ শর্মা চৌধুরী,গুয়াহাটিঃ
শাহ মোঃ ফরিদ গত ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে আসিয়ান অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরামর্শদানে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁকে এই অঞ্চলের অন্যতম বিশিষ্ট বাণিজ্য সংগঠক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তিনি শুধুমাত্র একজন উপদেষ্টা বা অংশগ্রহণকারী নন—তিনি নিজেই পূর্বোত্তর ভারতের স্বার্থে নর্থইস্ট ইন্ডিয়া - আসিয়ান চেম্বার অব কমার্স প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেই বণিক সংগঠনটি তাঁর নিজস্ব চিন্তা, অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়ে গঠিত হয়েছে। যার মাধ্যমে আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের সংযোগ আরও দৃঢ় হচ্ছে।
তাঁর নেতৃত্বে এবং উদ্যোগে মেঘালয়, মণিপুর এবং আসাম সীমান্তে একাধিক বর্ডার ট্রেড চেম্বারের সঙ্গে সক্রিয় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এর আগে তিনি ইন্ডিয়া - বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, গৌহাটি শাখার পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন, যেখানে তিনি দুই দেশের সীমান্ত বাণিজ্যের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
শাহ মোঃ ফরিদ শুধু প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নয়, চিন্তাভাবনাতেও সমান সক্রিয়। তিনি ‘Eastward Ho! North East India - ASEAN Connectivity’ নামে একটি ব্লগ লেখেন, যেখানে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা ও বিশ্লেষণমূলক মতামত শেয়ার করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন জার্নাল ও প্রকাশনায় উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ে প্রবন্ধ লিখে চলেছেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি, দক্ষতা এবং নিরন্তর প্রচেষ্টা আজ উত্তর-পূর্ব ভারতকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মানচিত্রে আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করছে।
শাহ মোঃ ফরিদ হলেন নর্থইস্ট ইন্ডিয়া - আসিয়ান চেম্বার অব কমার্স-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তিনি ইন্ডিয়া - বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, গৌহাটি শাখার একজন নিযুক্ত পরিচালকও। এছাড়াও তিনি মেঘালয় ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর্টার্স চেম্বার অব কমার্স, ডাউকি, গারো হিলস বর্ডার ট্রেড অ্যান্ড চেম্বার অব কমার্স, মেঘালয় এবং বর্ডার ট্রেড অ্যান্ড চেম্বার অব কমার্স, মোরেহ টাউন, মণিপুর—এইসব প্রতিষ্ঠানে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
তিনি আন্তর্জাতিক ব্যবসা এবং আসিয়ানে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরামর্শদানের ক্ষেত্রে ২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন।তিনি অর্থনীতিতে স্নাতক এবং মুম্বাইয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের জেভিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (XIM) থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে স্নাতকোত্তর ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে আসাম ও পূর্বোত্তর ভারতের সম্ভাবনা উন্মোচনে শাহ মোঃ ফরিদ-এর অগ্রণী ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তিনি আসিয়ানের একাধিক ক্লায়েন্টকে পরামর্শদানের সেবা প্রদান করার পাশাপাশি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবেও কাজ করেন। তিনি তার অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে! ‘ইস্টওয়ার্ড হো!(Eastward Ho!) নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া - আসিয়ান কানেক্টিভিটি’ নামে একটি ব্লগ লেখেন এবং বিভিন্ন প্রকাশনায় প্রবন্ধ লেখেন। বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব ভারত - বাংলাদেশ সীমান্ত বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বিস্তৃতভাবে লিখে চলছেন।
নিজের কার্যালয়ে শাহ মোঃ ফরিদ
শাহ মোঃ ফরিদ কেবল সীমান্ত বাণিজ্যেই সীমাবদ্ধ নন — তিনি বিভিন্ন দেশের নিযুক্ত প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বাণিজ্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। একইসঙ্গে তিনি আসাম ও পূর্বোত্তর ভারতের সঙ্গে আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে একটি স্থায়ী বাণিজ্য গড়ে তোলার উদ্যোগেও অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন।
তিনি শুধু নীতিগত স্তরে কাজ করেননি— আসামের কৃষি ও হস্তশিল্পভিত্তিক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতেও তিনি বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি আসামের বিভিন্ন কৃষিপণ্য (agro products) রপ্তানির পথ খুলে দিয়েছেন।
তিনি উল্লেখ করেন যে,জি আই ট্যাগ, কাগজী লেবু ( kagji lebu) – যেটি আসামে উৎপন্ন হয়, তার জিওগ্রাফিক্যাল ট্যাগ (GI) স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আসাম সরকার আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্য প্রসারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।
তাঁর মতে, আসামের গোয়ালপাড়া ও ধুবরির অলংকারমূল্য মাছ (ornamental fish) আন্তর্জাতিক বাজারে বিপুল চাহিদা তৈরি করেছে। এর রপ্তানি সম্ভাবনা বিশাল, এবং সঠিক পরিকল্পনা ও লগ্নিতে উত্তর-পূর্ব ভারতের অর্থনীতির অন্যতম স্তম্ভ হয়ে উঠতে পারে। যদিও তিনি অসমে চাহিদার তুলনায় রাজ্যে উৎপাদনের ঘাটতি রয়েছে বলে জানান।
উত্তর-পূর্ব ভারত,আসিয়ান এবং দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংযোগ বিষয়ক নানা প্ল্যাটফর্মে তিনি একজন আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এর ফলে বেপারে বাণিজ্যে প্রচুর শিক্ষিত য়ুবকরা এগিয়ে এসেছেন। তিনি আওয়াজ দ্যা ভয়েসকে জানান,"বর্তমান সরকার বিগত ১০ বছরে বিদেশে আমদানী ও রপ্তানী ব্যবসার ক্ষেত্রে আমুল নীতিগত পরিবর্তন এনেছে যার ফলে দেশ জুড়ে এক প্রতিকুল বাতাবরণ তৈরী হয়েছে।"
তবে তিনি আশাবাদী বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক একদিন উন্নতি হবে এবং উত্তর পূর্ব ভারতের সাথে ব্যবসা দ্বিগুণ বাড়বে।