বাঙালি সাঁতারু আরতি সাহা আজকের দিনে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন

Story by  atv | Posted by  Aparna Das • 3 d ago
বাঙালি সাঁতারু আরতি সাহা
বাঙালি সাঁতারু আরতি সাহা
 
শান্তি প্রিয় রায়চৌধুরী

বছরের পর বছর ধরে ভারত বেশ কিছু প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদ তৈরি করেছে। যেমন রয়েছেন অভিনব বিন্দ্রা, পিটি ঊষা, পিভি সিন্ধু, মনু ভাকেরে মতো খেলোয়াড় কিশোর বয়স পার করার আগেই অসাধারণ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ক্রীড়াঙ্গনে। ভারতীয় সাঁতারু আরতি সাহা তাদের মধ্যে একজন।
 
অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয়, আরতি সাহা ১৯৫২ সালের হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে যখন তার গেমসে অভিষেক ঘটে তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর, ১০ মাস এবং ৩০৫ দিন। এটি এমন একটি রেকর্ড যা এখনও অক্ষুণ্ণ আর এই রেকর্ড অদূর ভবিষ্যতেও ভাঙার কোন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আর ১৯৪০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী আরতি সাহা মাএ ১৯ বছর বয়সে আরও একটি রেকর্ড করেছিলেন যে রেকর্ড আজও অক্ষত। আর এই রেকর্ডটিও অদূর ভবিষ্যতে ভাঙবে বলে মনে হয় না। 
 
সেই রেকর্ডটি হল, ১৯ বছর বয়সে পা রাখার পাঁচ দিন পর, ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৯ তারিখে, আরতি সাহা  দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতে ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছিলেন ১৬ ঘন্টা ২০ মিনিট সাঁতার কাটার পর। তিনি ৪২ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এই দিন ইংল্যান্ডের স্যান্ডগেটে পৌঁছে সফলভাবে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার কেটে রেকর্ড বইয়ে নিজের নাম লিখিয়ে ছিলেন।
 
ইংলিশ  চ্যানেল পার হওয়ার জন্য তিনি ১৯৫৮ সালে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতারে পাড়ি দেওয়া প্রথম এশীয় পুরুষ বাংলাদেশী সাঁতারু ব্রজেন দাসের অনুপ্রেরণায় আরতি সাহা এই কঠিন কোর্সের জন্য প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তার প্রচেষ্টার জন্য তাকে সমর্থন করেন মিহির সেন, যিনি ইংলিশ চ্যানেল সাঁতারে পাড়ি দেওয়া প্রথম ভারতীয় পুরুষ সাঁতারু।
 
আরতি সাহা ১৯৫৯ সালের আগস্টে তার প্রথম প্রচেষ্টা করেছিলেন। তবে, তার নৌকাটি শুরুর স্থানে দেরিতে পৌঁছায় এবং তিনি সর্বোত্তম সাঁতারের পরিস্থিতি মিস করেন। ভারতীয় সাঁতারু তবুও তার সাঁতার চালিয়ে যান কিন্তু তীব্র স্রোতের কারণে তার গন্তব্য থেকে কয়েক মাইল দূরে ফিরে যেতে বাধ্য হন।
 
উল্লেখ্য,১৯৫২ সালের অলিম্পিকে ভারতীয় দলে ডলি নাজির এবং আরতি সাহা দুজনকেই স্থান দেওয়া হয়েছিল। নীলিমা ঘোষ এবং মেরি ডি'সুজার সাথে, তারা ছিলেন অলিম্পিকে একমাত্র মহিলা ভারতীয় ক্রীড়াবিদ।
 
অলিম্পিকে মহিলাদের ২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোক হিটে আরতি সাহা যখন পুলে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তখন তিনি সর্বকনিষ্ঠ ভারতীয় অলিম্পিয়ান হয়ে ওঠেন।
 
মহিলাদের ২০০ মিটারের তৃতীয় হিটে আরতি সাহা সাঁতার কেটেছিলেন, গ্রেট ব্রিটেনের ব্রোঞ্জ পদকজয়ী এলেনর গর্ডনের সাথে। গর্ডন আরতির চেয়ে সাত বছরের সিনিয়র ছিলেন।
 
ভারতীয় সাঁতারু হিটে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেন, ৩:৪০.৮ সেকেন্ড সময় নেন এবং সেমিফাইনালের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। এটি তার অলিম্পিক অভিযানের প্রাথমিক সমাপ্তি ঘটায়। 
 
আরতি সাহা ১৯৬০ সালে ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন এবং তিনিই প্রথম ভারতীয় মহিলা ক্রীড়াবিদ যিনি এই সম্মান পান।
 
স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে তিনি ১৯৯৪ সালের ২৩ আগস্ট মারা যান।