জম্মু:
জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) পাহেলগামের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ছয়জন ব্যক্তি এবং দুইটি সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে একটি বিস্তৃত চার্জশিট দাখিল করেছে। অভিযুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি হল পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT) এবং তার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)। এই হামলায় ২৫ জন পর্যটক এবং এক স্থানীয় ঘোড়াচালক প্রাণ হারান।
১,৫৯৭ পৃষ্ঠার এই চার্জশিটটি এনআইএ একটি বিশেষ আদালতে দাখিল করেছে। এতে পাকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত গভীর ষড়যন্ত্রের বিবরণ রয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার মতে, পাকিস্তান “নিরবচ্ছিন্নভাবে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদত দিয়ে চলেছে”।
চার্জশিটে হাফিজ সইদের নেতৃত্বাধীন লস্কর-ই-তৈয়বা—যাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত উভয়ই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করেছে—এবং হাবিবুল্লাহ মালিক ওরফে সাজিদ জাটের নেতৃত্বাধীন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)-এর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল বাইসারান তৃণভূমিতে সংঘটিত পাহেলগাম হামলার পরিকল্পনা, সহায়তা ও বাস্তবায়নে এই সংগঠনগুলির ভূমিকা ছিল।
এনআইএর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানি হ্যান্ডলার সন্ত্রাসী সাজিদ জাটকেও জম্মুতে এনআইএ-র বিশেষ আদালতে দাখিল করা চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে।”
চার্জশিটে সেই তিন পাকিস্তানি সন্ত্রাসীর নামও রয়েছে, যারা ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পাহেলগামের বাইসারান তৃণভূমিতে ধর্মের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল। এই তিনজনকেই হামলার প্রায় ১০০ দিন পর, ২৯ জুলাই, শ্রীনগরের উপকণ্ঠে দাচিগামে ‘অপারেশন মহাদেব’-এর সময় সেনাবাহিনী হত্যা করে।
এনআইএর বিবৃতি অনুযায়ী, ওই তিন সন্ত্রাসীর পরিচয় হল—ফয়সল জাট ওরফে সুলেমান শাহ, হাবিব তাহির ওরফে জিবরান এবং হামজা আফগানি।
চার্জশিটে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার অভিযোগে প্রাসঙ্গিক দণ্ডবিধির ধারাও প্রয়োগ করা হয়েছে।এনআইএর আট মাসব্যাপী “সতর্ক ও বৈজ্ঞানিক তদন্ত”-এর ফলেই এই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
এছাড়াও, সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ২২ জুন গ্রেপ্তার হওয়া পারভেজ আহমদ ও বশির আহমদ জোথার—এই দুই অভিযুক্তের নামও চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই দুই ব্যক্তি হামলায় জড়িত তিন সশস্ত্র সন্ত্রাসীর পরিচয় প্রকাশ করে এবং নিশ্চিত করে যে তারা নিষিদ্ধ লস্কর-ই-তৈয়বা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত পাকিস্তানি নাগরিক।