গুয়াহাটি
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণে সমগ্র অসম ও দেশের সঙ্গে বরাক উপত্যকাও শোকস্তব্ধ। শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং তাঁর স্ত্রী গরিমা শইকিয়া গার্গের প্রতি সমবেদনা জানাতে আজ বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)-এর এক প্রতিনিধি দল গৌহাটিতে প্রয়াত শিল্পীর বাসভবনে উপস্থিত হয়।
প্রতিনিধি দলটি প্রথমে প্রয়াত শিল্পীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। পরে তাঁরা গরিমা শইকিয়া গার্গের হাতে একটি শোকপত্র তুলে দেন। শোকপত্রে উল্লেখ করা হয় যে, জুবিন গার্গের অকাল প্রয়াণে আসাম তথা সমগ্র দেশ যেমন শোকাহত, তেমনি বরাক উপত্যকার মানুষও গভীর শোকে স্তব্ধ। এবারের দুর্গাপুজোয় প্রায় প্রতিটি মণ্ডপে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে, গানে গানে তাঁকে স্মরণ করেছে সমগ্র বরাকবাসী।
শোকপত্রে আরও বলা হয়েছে যে, রাজনৈতিক প্ররোচনায় বহু বছর ধরে ব্রহ্মপুত্র ও বরাক উপত্যকার মধ্যে যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল, জুবিন গার্গ সেই বিভেদের প্রাচীর ভেঙে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। বিডিএফ প্রতিনিধি দল লিখেছে, “এই শোকের মুহূর্তে আমরা মানসিকভাবে গরিমা শইকিয়া গার্গের পাশে রয়েছি এবং তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।”
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন, “জুবিন গার্গের ছাত্রজীবনের একাংশ কেটেছে করিমগঞ্জ ( বর্তমানে শ্রীভূমি) জেলায়। তিনি বরাকের স্থানীয় ভাষা ও বাংলায় সাবলীল ছিলেন। নিজেকে তিনি প্রায়ই বলতেন ‘অর্ধেক অসমীয়া, অর্ধেক বাঙালি’। তাঁর অসংখ্য অসমীয়া ও বাংলা গান বরাকে সমানভাবে জনপ্রিয় ছিল।”
দত্তরায় আরও বলেন, “জুবিন গার্গ কখনও জাতি বা ধর্মের বিভাজনে বিশ্বাস করতেন না। তিনি মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি, ভালোবাসা ও সহাবস্থানের বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাই আজ জাতি-ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে রাজ্যের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়াই হবে তাঁর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।”
তিনি এ-ও দাবি জানান যে, প্রয়াত শিল্পীর মৃত্যু যেন রাজনীতির গোলকধাঁধায় হারিয়ে না যায় এবং প্রকৃত সত্য যেন উদঘাটিত হয়।
এই কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিডিএফ আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে এবং নীলাঞ্জনা চক্রবর্তী। বিডিএফ-এর পক্ষ থেকে আহ্বায়ক দেবায়ন দেব এক প্রেস-বিবৃতির মাধ্যমে এই সংবাদটি জানিয়েছেন।