কাশ্মীর
ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জম্মু-কাশ্মীর। টানা বৃষ্টির জেরে বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের পথে ভয়াবহ ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। কাটরায় মন্দিরে যাওয়ার মাঝপথে অর্ধকুঁয়ারীর কাছে ধস নামায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩২ জন পুণ্যার্থীর। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
পাহাড় থেকে আচমকা বিশাল বড় বড় পাথর গড়িয়ে নামায় আতঙ্ক ছড়ায় তীর্থযাত্রীদের মধ্যে। বহু মানুষ ধসের কবলে আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজে নেমেছে প্রশাসন। শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দির বোর্ড জানিয়েছে, আপাতত যাত্রা বন্ধ রাখা হয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য ভক্তদের যাত্রার পরিকল্পনা নতুন করে সাজানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ধসের পর বোর্ডের পক্ষ থেকে একটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে, যাতে পরিবার-পরিজনরা যোগাযোগ রাখতে পারেন। নম্বরগুলি হল +91 9906019460, +91 9906019446 এবং +91 9906019554। কল বা হোয়াটসঅ্যাপে এই নম্বরগুলিতে আপডেট পাওয়া যাবে।
এদিকে টানা দু’দিনের ভারী বর্ষণে জম্মু-কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গিয়েছে স্কুল, মহাসড়ক এবং ট্রেন পরিষেবা। তাউই নদীর জলস্ফীতি মারাত্মক আকার নিয়েছে, ভেসে গিয়েছে রাস্তা। বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মোবাইল টাওয়ার। কোথাও বন্যা, কোথাও আবার হড়পা বান ও সেতু ভাঙনের মতো ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন নদীর ধারে না যাওয়ার সতর্কতা দিয়েছে। ভূমিধসের ঘটনার পর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গে কথা বলে পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। এক্স হ্যান্ডেলে অমিত শাহ লেখেন, এই দুর্ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক, আহতদের সাহায্যে স্থানীয় প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও সমবেদনা প্রকাশ করে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।
ধসের পর দ্রুত তৎপর হয়েছে সিআরপিএফের ষষ্ঠ ব্যাটালিয়ন। তারা আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে কাটরার কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে স্থানান্তর করেছে। আহতদের দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সহায়তা। আবহাওয়া দপ্তর আগেই জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের একাধিক জেলায় লাল সতর্কতা জারি করেছিল। তবুও টানা বর্ষণে জম্মুর পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।