শম্পি চক্রবর্তী পুরকায়স্থ
আলোর উৎসব দীপাবলির দিনেই নিভে গেল বলিউডের এক আলোকস্তম্ভ। হাসির রাজপথে রাজত্ব করা কিংবদন্তি অভিনেতা আসরানি আর নেই। সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ মুম্বইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন এই প্রখ্যাত কৌতুকাভিনেতা।
প্রয়াত অভিনেতার ভাইপো অশোক আসরানি জানান, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগেও তিনি উৎসবের খবর জানতেন এবং সমাজমাধ্যমে সকলকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাসির সেই প্রিয় মুখ উৎসবের দিনেই চিরবিদায় নিলেন।
১৯৪০ সালে রাজস্থানের জয়পুরে জন্ম গোবর্ধন আসরানির। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে পড়াশোনার পর পুণের ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়ে শুরু হয় তাঁর চলচ্চিত্রযাত্রা। ষাটের দশকের শুরুতে বলিউডে পা রাখেন তিনি। প্রথম জীবনে বহু জনপ্রিয় ছবিতে সহ-অভিনেতা হিসেবে দেখা গেলেও, সত্তর ও আশির দশকে কৌতুকাভিনেতা হিসেবেই জয় করে নেন দর্শকদের হৃদয়।
তাঁর অভিনীত চলচ্চিত্রের তালিকায় রয়েছে ‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘বাওয়ার্চি’, ‘অভিমান’, ‘সরগম’, ‘মেরে আপনে’-র মতো কালজয়ী ছবি। শোলে ছবিতে তাঁর জেলর চরিত্রটি আজও বলিউডের ইতিহাসে এক কিংবদন্তি। তাঁর সংলাপ ও মুখভঙ্গি কৌতুককে দিয়েছে এক নতুন সংজ্ঞা।
প্রায় পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন আসরানি। শুধুমাত্র কৌতুকাভিনেতা নয়, এক দক্ষ চরিত্রশিল্পী হিসেবেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
অভিনেতার সহকারী বাবুভাই থিবানি জানান, আসরানি মৃত্যুর আগে স্ত্রী মঞ্জুকে অনুরোধ করেছিলেন যেন তাঁর শেষকৃত্যে ভিড় না হয়। তাঁর শেষ ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে আজ মঙ্গলবার মুম্বইয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
আসরানির প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা বলিউড। অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, জনি লিভার, জুহি চাওলা সহ বহু শিল্পী সামাজিক মাধ্যমে শোকবার্তা জানিয়েছেন। তাঁদের সকলেরই এক অভিব্যক্তি, এক যুগের অবসান। দীপাবলির আলোয় যখন সারা দেশ উজ্জ্বল, তখন হাসির মানুষটির প্রস্থান যেন সেই আলোয় এক বিষাদের ছায়া ফেলে গেল।