কুতুব আহমেদ
মুর্শিদাবাদ জেলার জলঙ্গী অঞ্চলটি শিক্ষাদীক্ষার দিক দিয়ে বেশ বর্ধিষ্ণু। মুর্শিদাবাদের শেষ বা শুরু বলা যায় অঞ্চলটিকে। জলঙ্গীর সীমানা ঘেঁষে বয়ে চলেছে পদ্মার শাখানদী। যদিও স্থানীয়রা এটিকে পদ্মা নদী বলেই অভিহিত করেন। পদ্মার ওপারে বাংলাদেশ। বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বিঘার পর বিঘা জমি পতিত হয়ে রয়েছে। শোনা যায় পদ্মা অনেক এগিয়ে আসায় এপারের বহু মানুষের জমি বাংলাদেশের মধ্যে ঢুকে গেছে। ঐতিহাসিক তো বটেই, ভৌগলিক দিক দিয়েও পশ্চিমবাংলার এই জনপদটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
বাংলার নদীকেন্দ্রিক উপন্যাসগুলো পড়লে পদ্মাপাড়ের মানুষের জীবন জীবিকারও কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, অর্থাৎ ধনী থেকে দরিদ্র-হতদরিদ্র সব মানুষেরই বাস এই জলঙ্গী জনপদে। কিন্তু শিক্ষার প্রতি এখানকার মানুষের অসম্ভব একটা প্যাশনেট রয়েছে। একটা সময় মুর্শিদাবাদ জেলা শিক্ষার ক্ষেত্রে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া জেলাগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল। কিন্তু বর্তমানে মুর্শিদাবাদের সেই বদনাম কিছুটা হলেও ঘুচেছে। এর অন্যতম কারণ হিসাবে বলা যায়, এই জেলায় মিশন শিক্ষার প্রসার। আর সেই প্রসারকে তরান্বিত করে চলেছেন একদল শিক্ষা-পাগল মানুষ। যাঁরা নিজেদের জীবনের বেশিরভাগ সময়ই ব্যয় করেছেন শিক্ষার পিছনে। জলঙ্গী ব্লকের এমনই একজন শিক্ষা অন্ত প্রাণ মানুষ হলেন আব্দুস সাত্তার। পরিচিত মহল এবং জলঙ্গী-ডোমকল-ইসলামপুর সহ আশপাশের বহু অঞ্চলে তিনি 'সাত্তার মাস্টার' নামেই পরিচিত। তবে শুধু নাম-মহাত্ম্যেই একজন মানুষ মহৎ হতে পারেন না, যদি না তাঁর মধ্যে মানবিকতার ছিটেফোঁটাও থাকে। আব্দুস সাত্তার মানুষের কাছে 'সাত্তার মাস্টার' হতে পেরেছেন তাঁর মহৎ গুণাবলীর জন্যই।
'রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি'র প্রতিষ্ঠাতা আব্দুস সাত্তার
এক সময় চুটিয়ে রাজনীতি করেছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজনীতিতে তাঁর অংশগ্রহণ ছিল আদর্শিক জায়গাকে কেন্দ্র করে। এই আদর্শের জায়গা থেকে যাতে বিচ্যুত না হতে হয়, তার জন্য ত্যাগ করেছেন রাজনীতি। এমন আদর্শবাদী মানুষ এই বন্ধ্যা সময়ে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু সাত্তার মাস্টারের মতো নীতিবান শিক্ষকরা আছেন বলেই আজও শিক্ষার প্রতি মানুষের অনুরাগ হারিয়ে যায়নি। মানুষের সেই অনুরাগের ওপর ভরসা করেই আব্দুস সাত্তার জলঙ্গীর সাদিখাঁর দেয়ার (বাবুপাড়া) অঞ্চলে গড়ে তুলেছেন রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি (উ. মা.)। নার্সারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত আবাসিক এবং অনাবাসিক বাংলা মাধ্যম একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই অ্যাকাডেমি। কো-এডুকেশন। অর্থাৎ ছেলে এবং মেয়ে উভয় পড়ুয়াদের নিয়ে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে এগিয়ে চলেছে আব্দুস সাত্তারের প্রাণের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
দুই সন্তানের জনক আব্দুস সাত্তার যেমন নিজের আত্মজদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন, তেমনই অপরের সন্তানকে মানুষ করার গুরুদায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। এই যে "সকলের তরে সকলে আমরা /প্রত্যেকে আমরা পরের তরে" মন্ত্রকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলেছেন তিনি, এ বোধহয় অত্যন্ত মানসিক জোর বা সৎ সাহস ছাড়া সম্ভব নয়। এই পৃথিবীতে ক'জনই বা পারেন এমন পরের ছেলের দায়িত্ব নিয়ে তাদের মানুষ করার পণ নিতে। সাত্তার মাস্টারের কাছে এই কাজটি সহজ হয়ে ওঠে তাঁর নির্মোহ যাপনের কারণেই। কেননা জীবনের অনেকটা সময় তিনি ব্যয় করেছেন রাজনীতিতে। সেখানে আদর্শই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। কখনও আপোস করেননি অন্যায়ের সঙ্গে। ফলে রাজনীতি করে তাঁর পাওয়ার কিছু ছিল না। বরং দিয়েছেন অনেক কিছু। এখনও, এই মধ্য ষাটে এসেও তাঁর যেমন পাওয়ার কিছু নেই, হারানোরও কিছু নেই। কিন্তু শিক্ষার জন্য নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিতে আজও তিনি রাজি আছেন। তাই 'রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি'র শিক্ষার্থীরাই আজ তাঁর আত্মার আত্মীয়। তাদেরকে মানুষের মতো মানুষ করার লক্ষ্যেই নিজের জীবনকে বাজি রেখেছেন প্রৌঢ় এই মানুষটি।
'রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি'র একটি ছবি
'রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি'র বর্তমান পড়ুয়া প্রায় ৭০০ জন, আবাসিক এবং অনাবাসিক মিলিয়ে। জলঙ্গী থেকে যে রাজ্যসড়কটি ডোমকলের দিকে চলে গেছে সেই রাস্তার ওপরেই সাদিখাঁর দেয়ার অঞ্চল। মেন রোড থেকে মাত্র দুশো-তিনশো মিটার ভিতরেই অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। বিরাট বড় লোহার গেট টপকে যখন ভিতরে ঢুকলাম, তখন খুদে পড়ুয়াদের কলতানে ভরে ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির চত্বর। অফিস ঘরে ঢুকতেই সাদর আমন্ত্রণ জানালেন প্রতিষ্ঠানের কোষাধ্যক্ষ লুৎফর রহমান। প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষ আব্দুস সাত্তার সাহেব নিজেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান। একটু পরেই এলেন তিনি। একেবারে সাদামাটা চেহারা, চোখে চশমা। তার মধ্যে দিয়ে উঁকি দিচ্ছে উজ্জ্বল দুটি চোখ। সেই চোখে রয়েছে স্বপ্ন ছোঁয়ার অভিলাষ। এই অভিলাষকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলেছেন তিনি। সঙ্গে পেয়েছেন শিক্ষানুরাগী রসিদুল ইসলামকে। অন্যদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদক ইমরান আলী সেখ, সহ সম্পাদক জহুরা খাতুন, গোলাম মোর্তজা, হাসিনা খাতুনরা তাঁকে যোগ্য সঙ্গত করে চলেছেন। লুৎফর রহমানের কথা তো আগেই বলেছি। ফলে সবাইক নিয়ে এই যে বৃহত্তর কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন আব্দুস সাত্তার, তার জন্য অবশ্যই তাঁর কুর্নিশ প্রাপ্য।
২০২০ সাল থেকে পথচলা শুরু করেছে 'রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি।' সেই সময়ই আকাডেমি কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের জন্য যে ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছিল, গুরুত্বের বিচারে সেটি অনন্য। ফলে এই লেখার মধ্যে সেই ঘোষণাটি থাকলে পাঠকের কাছেও তার বিশেষ মর্যাদা রক্ষিত হবে, "শিক্ষা হল শিশু এবং শিক্ষার্থীর মনের মধ্যে যে সব মানসিক শক্তি জন্মসূত্রে বিদ্যমান সেগুলিকে বাইরে আনা। আমাদের 'রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি'র লক্ষ্য বর্তমান যান্ত্রিক সভ্যতার মধ্যে একটি শিশুকে সুনাগরিক, কর্মনির্ভর, সমাজ সচেতন, আত্ম সংবেদনশীল, প্রকৃত দেশাত্মবোধ সম্পন্ন মানব সন্তান হিসাবে গড়ে তোলা। আর এই লক্ষ্য অর্জনেই আমাদের অ্যাকাডেমি উন্নত শিক্ষার ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে সর্বাধুনিক শিক্ষা দিয়ে আপনার সন্তানকে সুশিক্ষিত এবং আগামী দিনের ভবিষ্যৎ হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়াস চালিয়ে যাবে।"
ছাত্র-ছাত্রীরা সাত্তার মাস্টারকে অভ্যর্থনা জানানো একটি মুহূর্ত
এখানকার আরও একটি বড় ব্যাপার হল অ্যাকাডেমির মধ্যে সম্প্রীতির বাতাবরণ। হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি বাস এই বাংলায়। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গীও তার ব্যতিক্রম নয়। আর যেখানে সাত্তার মাস্টারের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার একনিষ্ঠ কান্ডারী রয়েছেন সেখানে তাঁর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সম্প্রীতিকে রক্ষার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে সেটাই স্বাভাবিক। তাঁর এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, সহজ সরলভাবে মানুষের সঙ্গে মিশে যাবার প্রবণতা তাঁকে সব সম্প্রদায়ের মানুষের কাছেই প্রিয়পাত্র করে তুলেছে। ফলে মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রচুর পড়ুয়া এই অ্যাকাডেমিতে নিশ্চিন্তে শিক্ষা অর্জন করছে। এখানেই নিঃস্বার্থ কৃতিত্বের অধিকারী আব্দুস সাত্তার। আগাদমস্তক অসাম্প্রদায়িক মানুষটির জন্যই উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁদের প্রিয় পুত্র বা কন্যাটিকে এই অ্যাকাডেমিতে ভর্তি করেন। আব্দুস সাত্তারের নামের পরিচিত এতটাই বিস্তৃত, এতটাই ভরসাযোগ্য যে, অভিভাবকরা তাঁদের আত্মজদের এই অ্যাকাডেমিতে পাঠানোর জন্য দুবার ভাবেন না।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাথমিক ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সিলেবাস অনুসরণ করে শিক্ষা দেওয়া হয় রবীন্দ্র নজরুল আকাডেমির পড়ুয়াদের। তাদের পড়ানোর জন্য রয়েছেন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উচ্চ মেধাসম্পন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রয়োজনে অডিও ভিসুয়াল ক্লাসের ব্যবস্থাও আছে এখানে। অন্যদিকে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য রি-মিডিয়াল টিচিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছেন অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষ। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হিন্দি এবং কম্পিউটার শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধিক ও সার্বিক বিকাশের সঙ্গেই তাদের সৃজনশীল বিকাশের জন্য খেলাধূলা, সঙ্গীত, অঙ্কন, ক্যারাটে, নৃত্য প্রভৃতি বিষয়গুলির প্রতিও অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
রবীন্দ্র নজরুল আকাডেমিতে আবাসিক বালক-বালিকাদের জন্য রয়েছে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র, অর্থাৎ পৃথক হোস্টেল। পুষ্টিকর খাবার এবং বিশুদ্ধ পানীয় জল দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। এছাড়া অনাবাসিক পড়ুয়াদের জন্যও রয়েছে বিশেষ সুবিধা। অ্যাকাডেমির পিছন দিকে রয়েছে প্রমাণ সাইজের খেলার মাঠ। যার সবটাই সাত্তার সাহেবদের পারিবারিক সম্পত্তি। তাছাড়া রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমির মূল বিল্ডিংটি স্থাপিত হয়েছে সাত্তার সাহেবের নিজস্ব জমিতে। একজন মানুষ শিক্ষার প্রতি কতটা নিবেদিত প্রাণ হলে নিজের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি জাতির সেবার কাজে লাগাতে পারেন আব্দুস সাত্তার তার জলজ্যান্ত উদাহরণ। শিক্ষার পিছনে এমনভাবে শ্রম ব্যয় করা, এমনভাবে অকাতরে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া, এ কোনো সামান্য ব্যাপার নয়। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বেশ কিছু উপলব্ধি হল। তাঁর বলা কথাগুলো অজান্তেই গেঁথে গেছে মনের মধ্যে। সমাজের জন্য, জাতির জন্য যে বার্তা তিনি দিয়েছেন, সেগুলো পাঠক জানলে তাঁদেরও আমার মতো উপলব্ধি হওয়া স্বাভাবিক।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাত্তার মাস্টারের একটি ছবি
কতটা প্রাজ্ঞ আর কত অভিজ্ঞতা থাকলে একজন মানুষ এমন উচ্চাঙ্গের কথা বলতে পারেন, তা তাঁর নিজের মুখেই শোনা যাক, "আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল একটা স্কুল তৈরি করব, যে স্কুল হবে আর পাঁচটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যতিক্রম। অবসরের পর ২০২০ সালে আমরা রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করি। কিন্তু লকডাউনের জন্য প্রায় দেড় বছর কোনও পঠন-পাঠন শুরু করা যায়নি। ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই কারণেই যে, এখানে কোনও বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয় না। যে যার মতো তার নিজের ধর্ম পালন করতে পারে। আমরা মানবধর্মে বিশ্বাস করি। সেই মানবতার মধ্যে দিয়েই শিক্ষার্থীদের নৈতিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য থাকে আমাদের। যাতে দেশের একজন প্রকৃত নাগরিক হয়ে ভবিষ্যতে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে আমাদের পড়ুয়ারা। শুধু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয়, প্রশাসনিক বিভিন্ন ক্ষেত্রেও যেন এখানকার পড়ুয়ারা সসম্মানে অভিষিক্ত হতে পারে, রাজনৈতিক কিংবা আর্থ-সামাজিক স্তরেও যাতে তাদের পদার্পণ ঘটে, এমন মানসিকতা নিয়েই রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি এগিয়ে চলেছে।"
রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমি কোনও লাভজনক প্রতিষ্ঠান নয়। সম্পূর্ণ সমাজসেবার নিরিখে তৈরি এই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ সে ভাবনা কখনও ভাবেনও না। তবু ৭০০ পড়ুয়ার জন্য ৫৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অশিক্ষক কর্মী রয়েছে তাঁদের। এতগুলো মানুষের কর্মসংস্থান এবং তাঁদের ব্যয়ভার বহন করা সত্যি অর্থেই কঠিন। আর সেই কঠিন কাজকেই ভালোবাসা দিয়ে, মিষ্টি ব্যবহার দিয়ে সহজ করে নিয়েছেন চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তার সাহেব। মুসলিম সমাজ পিছিয়ে পড়া সমাজ। কিন্তু তার মধ্যেও উত্তরণের পথ দেখছেন এই সমাজের নেতৃস্থানীয়রা। সেই সমাজেরই একজন প্রতিনিধি হিসাবে, সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার একজন কারিগর হিসাবে আব্দুস সাত্তারদের মতো যোগ্য মানুষদের খুবই দরকার। কারণ সমাজের প্রতি তাঁরা যে বার্তা দেন তা অবশ্যই প্রাণিধানযোগ্য।
তাঁর বক্তব্য, শুধু ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার নয়, সরকারি সমস্ত দফতরে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব দরকার। বিশাল পরিসর আছে, সেই পরিসরগুলো ছিনিয়ে নিতে হবে যোগ্যতা দিয়ে। প্রশাসনিক লেভেলে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব এখনও অনেক কম। এই যে শূন্যতা, তাকে ভরাট করতে হবে। সব ক্ষেত্রেই যদি মুসলিম প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো যায়, তবেই এই সমাজের উন্নয়নের ধারায় জোয়ার আসবে।
খুব চাঁচাছোলা ভাষায় অনেক অপ্রিয় সত্যি কথা কেমন অবলীলায় বলে দিলেন রবীন্দ্র নজরুল অ্যাকাডেমির প্রাণপুরুষ আবদুস সাত্তার সাহেব। এরকম বলতে পারার মানুষেরও যে আজ বড় অভাব এই সমাজে। তিনি পারেন, এ তাঁর অর্জন। এই অর্জনের জন্যই বার বার কুর্নিশ জানাতে ইচ্ছা করে মানুষটিকে। জ্ঞান, নিষ্ঠা, সততা আর পরিশ্রম মনন নিয়ে আরও অনেক অনেক দিন তিনি সুস্থ শরীরে থাকুন এই ধরাধামে, আরও অনেক কাজ করুন জাতির জন্য, সমাজের জন্য, সর্বোপরি মানুষের জন্য।