নবীর জন্মদিনে ত্রিপুরা গাউছিয়া সমিতির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য ধর্মীয় শোভাযাত্রা
নূরুল হক/ আগরতলা
শুক্রবার ৫ সেপ্টেম্বর ছিল আরবি ১২ ই রবিউল আউয়াল ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র ফাতেহা ওয়াজ দহম। ইসলাম ধর্ম মতে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে এই দিনেই পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাই এই দিনটিকে ইসলামের একটি পবিত্র দিন হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এই দিনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করে থাকেন।
ত্রিপুরায় প্রতি বছরের মতো এবারও নবীর জন্মদিনে ত্রিপুরা গাউছিয়া সমিতির উদ্যোগে এদিন একটি বর্ণাঢ্য ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের হয়। আগরতলা ইন্দ্রনগর সৈয়দ ইউসুফ শাহের দরগা শরীফের সামনে থেকে এই ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের হয় এবং আগরতলার বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
ত্রিপুরা গাউছিয়া সমিতির ধর্মীয় শোভাযাত্রা
শোভাযাত্রায় ধর্মপ্রাণ মুসলিম পরিবারের শিশু, কিশোর সহ বিভিন্ন বয়সের লোকেরা ধর্মীয় পোশাকে সুসজ্জিত হয়ে অংশগ্রহণ করেন। ছোট ছোট শিশুদের হাতে দেখা যায় "আই লাভ মোহাম্মদ"-র প্লেকার্ড। পুলিশের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সুশৃংখলভাবে মিছিলটি আগরতলা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ধর্মীয় বার্তা এবং সৌভ্রাতৃত্বের বার্তার বার্তা ছড়িয়ে দেন। রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোকেরা মিছিল-টিকে স্বাগত জানান এবং ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরবর্তীকালে আগরতলা ইন্দ্রনগর জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে একটি বিশেষ মোনাজাত হয় এবং তাবারুক খাওয়ানো হয়। এদিনের মিছিলের শুরুতেও ইউসুফ সাহেব দরগায় বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এদিনের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শাসকদল বিজেপির প্রদেশ কার্যকরী কমিটির সদস্য তথা ত্রিপুরা সংখ্যালঘু উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, তিপড়া মথা দলের সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান শাহ আলম, গাউছিয়া সমিতির সভাপতি আব্দুল বারিক সহ অন্যান্যরা।
একইভাবে পশ্চিম নোয়াবাদী গাউছিয়া সমিতি এবং মুসলিম যুবক ভাইদের উদ্যোগে একটি সুসজ্জিত ধর্মীয় শোভাযাত্রা বের হয় এবং পশ্চিম নোয়াবাদী, লাড্ডু চৌমুহনী, নন্দনগর সহ শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে ইন্দ্রনগর দরগা শরীফের সামনে গিয়ে মিলিত হয়। সেই মিছিলের নেতৃত্ব ছিলেন আয়োজক কমিটির সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মুফতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন, পাণ্ডব আলী, নিজাম উদ্দিন সহ অন্যান্যরা। মিছিলের শুরুতে এই ধর্মীয় শোভাযাত্রার উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করেন মুফতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
শোভাযাত্রার একটি ছবি
এদিনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গোটা রাজধানী জুড়ে এক সম্প্রীতির চিত্র ধরা পড়ে। মুসলিম সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে অন্য ধর্মের লোকেদের মধ্যেও উৎসাহ লক্ষ্য নিয়েছিল। একইভাবে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মসজিদ এবং মুসলিম মহল্লা সহ বাড়িঘরে নবীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ ধরনের দোয়া এবং অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে।