নয়াদিল্লি :
শুক্রবার বীর বাল দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি ভবনে ‘প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার’ প্রদান করেন। প্রয়াত কন্যা ব্যোমা প্রিয়ার পক্ষে তার মা অর্চনা শিবরামকৃষ্ণন এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। তিনি জানান, কীভাবে ৮ বছর বয়সী ব্যোমা প্রিয়া তাঁদের আবাসিক কমপ্লেক্সের পার্কে বিদ্যুতায়িত একটি স্লাইড থেকে ৬ বছর বয়সী এক শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে নিজের জীবন উৎসর্গ করে।
এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্চনা শিবরামকৃষ্ণন বলেন,“আমি আমাদের মেয়ে ব্যোমা প্রিয়ার পক্ষ থেকে এই বীরত্বের পুরস্কার গ্রহণ করছি। সে তখন মাত্র ৮ বছর বয়সী। আমাদের অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের শিশুদের পার্কে খেলছিল। পার্কের একটি স্লাইড ক্ষতিগ্রস্ত ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তারের ওপর বসানো ছিল, যার ফলে স্লাইডটি বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। সেখানে খেলতে থাকা ৬ বছর বয়সী এক শিশু পড়ে গেলে ব্যোমা তাকে উদ্ধার করতে যায়, কিন্তু নিজেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। এই পুরস্কার পাওয়া আমাদের জন্য একদিকে গর্বের, আবার অন্যদিকে বেদনাদায়ক মুহূর্ত… আমরা চাইতাম, সে নিজেই এখানে এসে এই পুরস্কার গ্রহণ করতে পারত।”
আরেকজন বাল পুরস্কার প্রাপক বলেন,“পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপারেশন সিন্দুর শুরু হলে সেনারা আমাদের গ্রামে আসে। আমি ভাবলাম, তাঁদের সেবা করা উচিত। প্রতিদিন আমি তাঁদের জন্য দুধ, চা, ঘোল ও বরফ নিয়ে যেতাম… এই পুরস্কার পেয়ে আমি খুব ভালো অনুভব করছি। আমি কখনোই এমন কিছুর স্বপ্ন দেখিনি…”
২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি শ্রী গুরু গোবিন্দ সিং জির প্রকাশ পুরব উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, ২৬ ডিসেম্বর ‘বীর বাল দিবস’ হিসেবে পালিত হবে। এই দিবসটি শ্রী গুরু গোবিন্দ সিং জির পুত্র সাহিবজাদা বাবা জোরাওয়ার সিং জি ও বাবা ফতেহ সিং জির শাহাদত স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে, যাঁদের আত্মত্যাগ আজও প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।
— President of India (@rashtrapatibhvn) December 26, 2025
আজ দুপুর প্রায় ১২টা ১৫ মিনিটে জাতীয় রাজধানীর ভারত মণ্ডপমে ‘বীর বাল দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশে ভাষণও দেবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বীর বাল দিবস উপলক্ষে, সাহিবজাদাদের অসাধারণ সাহস ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ সম্পর্কে নাগরিকদের অবহিত ও শিক্ষিত করার উদ্দেশ্যে ভারত সরকার সারা দেশে অংশগ্রহণমূলক বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করছে। পাশাপাশি, ভারতের ইতিহাসের এই তরুণ বীরদের অদম্য সাহস, আত্মত্যাগ ও বীরত্বকে সম্মান ও স্মরণ করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
এসব কর্মসূচির মধ্যে গল্প বলার আসর, আবৃত্তি, পোস্টার তৈরি এবং প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতাসহ নানা কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।