নয়া দিল্লি
ভারত শীঘ্রই ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথভাবে ১২০ কিলোর নিউটন ইঞ্জিনের উন্নয়ন ও উৎপাদন শুরু করবে। এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিকতা শীঘ্রই সম্পন্ন করা হবে। ফ্রান্সের সাফরান এস এবং ডি. আর. ডি. ও-র অধীনে ভারতের গ্যাস টারবাইন রিসার্চ এস্টাব্লিশমেন্ট (জি. টি. আর. ই) যৌথভাবে এই প্রকল্পে যুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সময় জাতীয় পর্যায়ে নিজস্ব জেট ইঞ্জিন বিকাশের আহ্বান জানানোর পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন বিকাশের প্রধান কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।
সাফরান এবং জিটিআরই যৌথভাবে ১২ বছরের মধ্যে নয়টি প্রোটোটাইপ ইঞ্জিন তৈরি করবে। এই ইঞ্জিনটি প্রাথমিকভাবে ১২০ কিলো নিউটনের হবে, যার ক্ষমতা ভবিষ্যতে ১৪০ কিলো নিউটনে বাড়ানো হবে।
ইঞ্জিনটি ভারতীয় বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি অধিকারের (আইপিআর) উপর তৈরি করা হবে এবং ফরাসি সংস্থা সাফরান ১০০ শতাংশ প্রযুক্তি ডি. আর. ডি. ও-কে হস্তান্তর করবে। এতে অত্যাধুনিক স্ফটিক ফলক প্রযুক্তিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ইঞ্জিনটি এএমসিএ (অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফট) নামে একটি টুইন-ইঞ্জিন মাল্টি-রোল ফাইটার এয়ারক্রাফটে স্থাপন করা হবে। যুদ্ধবিমানটি যৌথভাবে তৈরি করবে ভারতীয় বেসরকারী খাত-টাটা গ্রুপ, এলএন্ডটি এবং আদানি ডিফেন্স।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশীয় ইঞ্জিনের উন্নয়নের ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ এই শীর্ষস্থানীয় দেশীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এই ক্ষেত্রকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে। বর্তমানে শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের নিজস্ব যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন রয়েছে। চীন এখনও রাশিয়ান বা নকল ইঞ্জিন ব্যবহার করে।
এর আগে ভারত কাবেরী ইঞ্জিন প্রকল্প শুরু করেছিল। কিন্তু সেই প্রকল্প সফল হয়নি। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে জিই-৪০৪ এবং জিই-৪১৪ ইঞ্জিন সরবরাহ করছে, যদিও প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্পূর্ণ হয়নি। অন্যদিকে, ভারত ফ্রান্সকে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসাবে বিবেচনা করে এবং তাই ফ্রান্সের সঙ্গে এই যৌথ প্রকল্পটি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৯৮ সালের পোখরান পারমাণবিক পরীক্ষার সময় ফ্রান্স ভারতের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। ফ্রান্সও ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সমর্থন করে আসছে।
ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনী উভয়ই আগামী দশকে এই ১২০-১৪০ কিলো নিউটন পাওয়ার সাফরান-জিটিআরই ইঞ্জিনের উপর নির্ভর করবে। এতে ভারতের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।