নয়া দিল্লি
কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে মানুষ–প্রাণীর সংঘাত ও দুর্ঘটনা রোধে বড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার কলীয়াবর–নুমালীগড় জাতীয় সড়ক (এনএইচ–৭১৫) চার লেন করার অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬,৯৫৭ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই ৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক অংশের মধ্যে ৩৪ কিলোমিটার থাকবে উঁচু ভায়াডাক্ট আকারে, যা সরাসরি কাজিরাঙার ভেতর দিয়ে যাবে। তাঁর কথায়, “বর্ষার সময় গণ্ডারসহ নানা বন্যপ্রাণী পাহাড়ি অঞ্চলের দিকে যাওয়ার সময় রাস্তা পেরোয়। তখনই দুর্ঘটনা ও সংঘাতের ঝুঁকি বাড়ে। নতুন এই প্রকল্প সেই সমস্যা অনেকটাই কমাবে।”
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নগাঁও, কার্বি আংলং এবং গোলাঘাট জেলা জুড়ে বিস্তৃত এই মহাসড়ককে দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা হবে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যেমন এলিভেটেড করিডর ও ওয়াইল্ডলাইফ ক্রসিং।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “এটি অসমের অন্যতম বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প। কাজিরাঙায় ৩৪ কিলোমিটারের এলিভেটেড করিডর একদিকে যান চলাচল সহজ করবে, অন্যদিকে অসংখ্য প্রাণ বাঁচাবে। মানব–প্রকৃতি সহাবস্থানের নতুন মানচিত্র তৈরি হবে।”
এদিকে, অসমে আরেকটি ঐতিহাসিক উদ্যোগের সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্বোধন করেছেন নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড, যা হল বাঁশ–ভিত্তিক বিশ্বের প্রথম দ্বিতীয় প্রজন্মের ইথানল প্ল্যান্ট। ২০১৯ সালে তিনি এর শিলান্যাস করেছিলেন।
প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা এই বায়ো–রিফাইনারি উত্তর–পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বর্তমানে দেশে ২০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে, যা নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্ভব হয়েছে।
এই দুই প্রকল্প একসঙ্গে উত্তর–পূর্ব ভারতের উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই জ্বালানির ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় রচনা করবে বলে মত পর্যবেক্ষকদের।