গুয়াহাটি
অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন যে, সিটিজেনশিপ (সংশোধনী) আইন (CAA) রাজ্যে প্রাসঙ্গিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী জানান, হিন্দু বাঙালি সম্প্রদায়ের সদস্যরা নাগরিকত্বের জন্য CAA-এর আওতায় আবেদন করেননি, কারণ তারা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবেই বিবেচনা করেন।
শৰ্মা বলেন, “হিন্দু বাঙালিদের বিদেশি সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই। তারা ১৯৭১ সালের আগে অসমে এসে স্থায়ীভাবে বসতি গড়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭১ সালে তাদের অবৈধ না বলে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দিয়েছিলেন।”
তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত মাত্র ১২টি আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে মাত্র তিনজনকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “CAA বিরোধী আন্দোলনে ৫ জনের প্রাণহানি ঘটলেও আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় নগণ্য। বিশেষ করে, নতুন ইমিগ্রেশন ও বিদেশি (ছাড়পত্র) আদেশ কার্যকর হওয়ার পর থেকে আর কোনো আবেদন জমা পড়েনি।”
২০২৫ সালের এই বিশেষ আদেশ অনুযায়ী, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আগত সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বী, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান, যারা ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪-এর আগে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন, তারা বৈধ কাগজ ছাড়াই থাকতে পারবেন।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করলেন, “যদি লক্ষাধিক আবেদন আসে, আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো। তবে বর্তমানে এটি অসমে প্রাসঙ্গিক নয়।”
এদিকে, বিরোধী দল ও অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (AASU) এই আইনকে অসম চুক্তির বিরুদ্ধে আখ্যায়িত করেছেন। কারণ, চুক্তিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত আসা ব্যক্তিদের বৈধ নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হবে।
১৯৮৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাক্ষরিত অসম চুক্তি দীর্ঘ আন্দোলনের পর একটি স্থায়ী সমাধান হিসেবে গৃহীত হয়েছিল, যা হাজার হাজার প্রাণহানির অবসান ঘটায়।