শান্তিপ্রিয় রায় চৌধুরী:
আগামী বছরের জানুয়ারিতে চালু হবে ক্রিকেটের নতুন ফরম্যাট। যার নাম দেওয়া হয়েছে টেস্ট-টোয়েন্টি। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেডেন, ভারতের হরভজন সিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্লাইভ লয়েড ও দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স এই নতুন ক্রিকেট ফরম্যাটের সূচনা করেছেন। এখানে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির মিশ্রণ স্পষ্ট।
কীভাবে খেলা হবে এ ফরম্যাটে? কেনই বা এর নাম টেস্ট-টোয়েন্টি?
এই নতুন ফর্ম্যাটে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিকে এক করে দেওয়া হয়েছে। আর তা করা হয়েছে তরুণ ক্রিকেটারদের জন্যই। এই ফরম্যাটে প্রতিটা ম্যাচ চলবে একদিন, প্রতিটা ম্যাচে থাকবে টি-টোয়েন্টির মতো লড়াই।
নতুন মরসুম শুরু হবে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে,আয়োজক হবে ভারত :
এটি প্রথম মরসুম। জুনিয়র টেস্ট-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নশিপ নামে শুরু হবে এটি। প্রথম মরসুম হবে ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ক্রিকেটারদের নিয়ে। এর আয়োজক হবে ভারত। দ্বিতীয় মরসুম থেকে মহিলা ক্রিকেটারদেরও সুযোগ দেওয়া হবে।
টেস্ট-টোয়েন্টির নিয়ম কী থাকছে?
খেলা হবে মোট ৮০ ওভার। প্রতিটি দল খেলবে দুটো ইনিংস।
প্রতিটা ইনিংস হবে ২০ ওভারের।
প্রতিটা ইনিংসের রান পরের ইনিংসে ক্যারিফরওয়ার্ড হবে। ঠিক টেস্ট ক্রিকেটের মতো। প্রতিটা দল এই ফরম্যাটে দু’বার করে ব্যাট করতে পারবে। অর্থাৎ, একটি দল দুটো ইনিংস মিলিয়ে ৪০ ওভার ব্যাটিং করবে।
পুরো ম্যাচই শেষ হবে একদিনে।
ধরা যাক টিম ‘এ’ ও টিম ‘বি’ এর মধ্যে খেলা হচ্ছে। টিম ‘বি’ প্রথমে ২০ ওভার ব্যাট করে ১৭০ রান তুলল। এরপর টিম ‘এ’ ব্যাট করতে নেমে ১৮০ রান করল। তৃতীয় ইনিংসে ফের ব্যাট করতে নামবে টিম ‘বি’। এবার তারা যে রান করবে সেটা যোগ হবে প্রথম ইনিংসের সঙ্গে। ধরা যাক তারা ১৬০ রান করলো। তাহলে তাদের মোট রান গিয়ে দাঁড়াবে ৩৩০। তাহলে চতুর্থ ইনিংসে টিম ‘এ’র জিততে দরকার হবে ১৫১ রান। যদি কোনো দল ২০ ওভারের মধ্যে অলআউট হয়ে যায়, তা হলে তাদের ইনিংস সেখানেই শেষ হবে। সেই ইনিংসে তারা আর ব্যাট করতে পারবে না। পরের ইনিংস আবার নতুন করে শুরু হবে।
প্রতিটা দল ১৬ জনের স্কোয়াড নিয়ে তৈরি করতে পারবে:
প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজিতে ৮ জন ভারতীয় ও ৮ জন বিদেশি ক্রিকেটার রাখতে হবে। প্রথম মরসুমে থাকবে ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি। তিনটি ভারতের আর তিনটি অন্য দেশের।
ক্রিকেটের এই সংস্করণ উদ্ভাবন করেছেন ওয়ান-ওয়ান সিক্স নেটওয়ার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্রীড়া উদ্যোক্তা গৌরব বাহিরভানি।
টেস্ট-টোয়েন্টি সংস্করণের পরামর্শক বোর্ডে আছেন ক্রিকেটের কিংবদন্তি স্যার ক্লাইভ লয়েড, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ম্যাথু হেইডেন ও হরভজন সিং।
নতুন টেস্ট টোয়েন্টি সংস্করণ নিয়ে পরামর্শকদাতারা কি বলছেন:
ক্লাইভ লয়েডের মতে, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে, আমি টেস্টের ক্রিকেটার। এটা নিয়ে সন্দেহ নেই। আমার মতে, টেস্টকে অবহেলা করা হচ্ছে বছরের পর বছর। আমার মতে, এই সিস্টেমে নতুন কিছু যোগ করা দরকার। কারণ, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বা টেস্ট না খেললে সেরা ক্রিকেটার খুঁজে বের করা কঠিন।’
এবি ডি ভিলিয়ার্স বলছেন, ‘এটি খেলোয়াড় ও দর্শকের জন্য নতুন স্বপ্নের সূচনা।’হেডেন বলছেন, ‘এটি এক প্রজন্মের সঙ্গে আরেক প্রজন্মের সেতুবন্ধন তৈরি করছে।’