অপর্ণা দাস / গুয়াহাটি
চন্দননগরের হেলাপুকুর সার্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো এ বছর যেন ছাপিয়ে গেছে নিজেকেই। এবারের বিশেষ আকর্ষণ, হেলাপুকুরের আদরণীয়া ‘সোনামা’ এখন হীরের গয়নায় সজ্জিত, ঝলমল করছে আলোকিত মণ্ডপজুড়ে। গত বছর যেখানে দেবী জগদ্ধাত্রীকে প্রায় ৩০ ভরি খাঁটি সোনার অলঙ্কারে সাজানো হয়েছিল, সেখানে এ বছর যুক্ত হয়েছে দামি হীরকখচিত গয়না, যা পুরো শহরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এ বছর তাদের পুজো ৫৫ বছরে পদার্পণ করায় বিশেষ থিম নেওয়া হয়েছে, ‘স্বর্ণকমল বর্ষ’। সেই উপলক্ষে এই অনন্য আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে কলকাতার প্রখ্যাত গয়না সংস্থা সেঙ্কো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস। দেবীমূর্তির গলায়, কানে ও কপালে জড়ানো হীরের অলংকার বিশেষভাবে তৈরি হয়েছে এই পুজোর জন্য। অলঙ্কার নকশায় দেখা যাচ্ছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার অপূর্ব মেলবন্ধন, কোথাও পদ্মফুলের মোটিফ, কোথাও আবার সূক্ষ্ম সূর্যকিরণের রেখা।
গত বছরের তুলনায় এ বছর দর্শনার্থীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হেলাপুকুরে ভিড় জমাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। আলোকসজ্জায় দেখা যাচ্ছে বিশাল স্বর্ণপদ্ম ও মুকুট-আকৃতির লাইট ডিজাইন, যা প্রতিমার অলঙ্কারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাজানো হয়েছে।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩০ জন পুলিশকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী নিরন্তর তৎপর। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই স্বর্ণ-হীরের আয়োজন শুধু বিলাসিতা নয়, বরং চন্দননগরের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক।
হেলাপুকুর বারোয়ারির পুজো বরাবরই আলো-সজ্জা ও অলঙ্কার সাজের জন্য প্রসিদ্ধ। ২০২২ সালে ৩০ ভরি সোনার সাজে দেবীমূর্তি আলোচনায় আসে, ২০২৩-এ ৫০ ভরিতে পৌঁছয়, আর ২০২৫-এ এসে তা হীরের ঝলকানিতে রূপান্তরিত, এই ধারাবাহিক উন্নতিই প্রমাণ করছে পুজো-উৎসবের ক্রমবর্ধমান গৌরব।