লক্ষ্য ভিক্ষাবৃত্তি দূর করা; এমারতে শারয়ীয়াহ ও নদ‌ওয়ার বয়তুল মালের সামাজিক কর্মসূচি।

Story by  atv | Posted by  Aparna Das • 1 d ago
এমারতে শারয়ীয়াহ ও নাদওয়াতুত তামীর ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের একটি ছবি
এমারতে শারয়ীয়াহ ও নাদওয়াতুত তামীর ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের একটি ছবি
 
নূরুল হক / আগরতলা

সমাজ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তর পূর্ব ভারত এমারতে শারয়ীয়াহ ও নাদওয়াতুত তামীরের ধর্মনগর মহকুমার অধীন ফুলবাড়ি আঞ্চলিকের নদ‌ওয়ার বয়তুল মাল। উত্তর পূর্ব ভারত এমারতে শারয়ীয়াহ ও নাদওয়াতুত তামীর একটি ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন। এই সংগঠনের অন্যতম শাখা হচ্ছে বয়তুল মাল যার বাংলা অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সারা বছর বিভিন্ন ধরনের মানবিক এবং সামাজিক কর্মসূচির পাশাপাশি নদ‌ওয়ার বয়তুল মাল সমাজের অপেক্ষাকৃত গরিব লোকেদের চিহ্নিত করে তাদের স্বাবলম্বী করার ব্যবস্থা করে।
 
এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ফুলবাড়ি আঞ্চলিক এমারতের কাজী শরীয়ত মৌলানা আকলাস উদ্দিন বলেন সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে ভিক্ষাবৃত্তির সাথে জড়িত লোকেদের চিহ্নিত করে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সহায় সম্বলহীন লোকদের স্বাবলম্বী করতে সেলাই মেশিন থেকে শুরু করে, রিক্সা, রাইস মিল, ঠেলা ইত্যাদি বিতরণ করা হয়। একইভাবে গৃহহীনদের গৃহদান, শিশুদের শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, বস্ত্র দান এবং অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে  নদ‌ওয়ার বয়তুল মাল অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করে চলছে।
 
প্রসঙ্গত উত্তর পূর্ব ভারতের প্রথম আমীরে শরীয়ত তথা অসম বিধানসভার (বদরপুরের) প্রাক্তন বিধায়ক মরহুম হজরত মাওলানা আব্দুল জলীল চৌধুরী ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এই বয়তুল মাল নামক আর্থসামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জন্মলগ্ন থেকে এই বয়তুল মাল দরিদ্র অসহায় গৃহীনদের সাহায্য করে চলছে। সমাজের অপেক্ষাকৃত নিম্ন বৃত্ত এবং যারা ভিক্ষাবৃত্তির সাথে জড়িত তাদেরকে সেই অবস্থা থেকে ফিরিয়ে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্য নিয়ে নদ‌ওয়ার বয়তুল মাল কাজ করে।
 
সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে হওয়া একটি বৈঠকের ছবি
 
২০২৫ অর্থবছরে বয়তুল মাল বণ্টনের কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে ৭ সেপ্টেম্বর রবিবার নদ‌ওয়ার বয়তুল মাল ধর্মনগর মহকুমাধীন ফুলবাড়ি অঞ্চলের অফিস কার্যালয় থেকে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে লক্ষাদিক টাকার বিভিন্ন সামগ্রী মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী এবং আর্থিকভাবে দুর্বল লোকেদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর্থিকভাবে দুর্বল মেধাবী পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার জন্য এককালীন নগদ টাকা তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। একইভাবে চিহ্নিত কিছু দরিদ্র পরিবারের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে তাদেরকে সেলাই মেশিন কিনে দেওয়া হয়েছে।
 
যদিও এই প্রতিষ্ঠান বরাবরই তাদের সামাজিক এবং মানবিক কর্মসূচি প্রচারে আনতে আগ্রহী নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা দান গ্রহিতাদের পরিচয় গোপন রেখেই তাদের উন্নয়ন করে চলেছে। ধর্মনগর অঞ্চলের এই সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত প্রায় সমস্ত সদস্যই শিক্ষকতা করেন। তারা নিজেদের ব্যক্তিগত আর্থিক সাহায্য ছাড়াও সম্পদশালী মানুষের জাকাতের  টাকা জমিয়ে সাংগঠনিকভাবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
 
বিগত পাঁচ বছরের হিসেব তুলে ধরলে এই বয়তুল মালের সহযোগিতায় অন্তত শতাধিক মানুষ স্বাবলম্বী হওয়ার মুখ দেখেছেন। একইভাবে পাঁচ শতাধিক ছাত্রছাত্রীর শিক্ষা পরিচালনায় সহযোগী ভূমিকা রাখা হয়েছে। ধর্মনগর অঞ্চলে এই সংগঠন পরিচালনায় মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন ফুলবাড়ি আঞ্চলিকের সভাপতি তথা প্রাক্তন শিক্ষক মুতিউর রহমান, ধর্মনগর জেলা নদওয়ার মক্তব পরিদর্শক তথা প্রাক্তন শিক্ষক মাওলানা সিরাজ উদ্দিন, ফুলবাড়ি আঞ্চলিকের সাধারণ সম্পাদক তথা শিক্ষক জনাব আসহাব উদ্দিন চৌধুরী, ফুলবাড়ি আঞ্চলিকের ক্বাজিয়ে শরীয়ত তথা  শিক্ষক মাওলানা এখলাছ উদ্দিন, নদওয়ার বিশিষ্ট কর্মী তথা শিক্ষক জনাব আব্দুল কালাম, ফুলবাড়ি আঞ্চলিকের মক্তব পরিদর্শক তথা শিক্ষক মাওলানা আব্দুন নূর, ফুলবাড়ি বড় মসজিদের ইমাম মাওলানা রমিজ উদ্দিন লস্কর,নদওয়ার বিশিষ্ট কর্মী যথা ক্রমে জনাব আব্দুল আলী চৌধুরী, মাওলানা আয়নুল হক, জনাব জয়নাল হুসেন চৌধুরীর, মাওলানা ছাবির আহমদ, মাওলানা ছইফ উদ্দিন, জনাব আজির উদ্দিন কালা প্রমুখ।