২১শে অক্টোবর: আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস

Story by  Sudip sharma chowdhury | Posted by  Aparna Das • 9 d ago
২১শে অক্টোবর: আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস
২১শে অক্টোবর: আজাদ হিন্দ সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস
 
সুদীপ শর্মা চৌধুরী / গুয়াহাটি:

নেতাজির স্বপ্নে স্বাধীন ভারতের এক উজ্জ্বল অধ্যায়:

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে ২১শে অক্টোবর একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। ১৯৪৩ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুরে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু গঠন করেছিলেন ‘আজাদ হিন্দ সরকার’, ভারতের প্রথম স্বাধীন সরকার। এটি ছিল সেই স্বপ্নের প্রতীক, যেখানে ভারতবাসী বিদেশি শাসনের শৃঙ্খল ভেঙে আত্মমর্যাদা ও স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাবে।
 
নেতাজি বিশ্বাস করতেন, “স্বাধীনতা চাওয়া নয়, অর্জন করতে হয়।” সেই উদ্দেশ্যেই তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি (আই.এন.এ.) গঠন করেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল অস্ত্র হাতে দেশকে স্বাধীন করা। আজাদ হিন্দ সরকার ঘোষণা করে, ভারত স্বাধীন, এবং এই সরকার জনগণের প্রতিনিধি।
 
'আজাদ হিন্দ ফৌজ' - এর সদস্যরা
 
এই ঐতিহাসিক সরকারের গঠন শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, এটি ছিল জাতীয় আত্মবিশ্বাসের পুনর্জাগরণ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারতীয় প্রবাসীরা নেতাজির আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। উত্তর-পূর্ব ভারতের মাটি, বিশেষত মণিপুর ও নাগাল্যান্ড, হয়ে উঠেছিল সেই মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধক্ষেত্র। এখান থেকেই নেতাজির সৈন্যরা এগিয়ে এসেছিলেন দেশের মাটিতে স্বাধীনতার পতাকা উড়াতে।
 
তবে স্বাধীন ভারতের এই মহান নায়কের জীবন ঘিরে আজও একটি অমীমাংসিত রহস্য রয়ে গেছে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য। ১৯৪৫ সালের তথাকথিত বিমান দুর্ঘটনার পর তাঁর মৃত্যুর কোনও নিশ্চিত প্রমাণ আজও মেলেনি। নানা অনুসন্ধান, বিভিন্ন কমিশনের রিপোর্ট, সাক্ষ্য ও প্রমাণ, সবকিছু সত্ত্বেও তাঁর অন্তর্ধান আজও ইতিহাসের এক অন্ধকার অধ্যায়।
 
'আজাদ হিন্দ ফৌজ' - এর একটি ছবি
 
তবুও নেতাজির আদর্শ, তাঁর আত্মত্যাগ, তাঁর স্বপ্ন আজও কোটি ভারতবাসীর প্রেরণা। তিনি বলেছিলেন,“তুমি আমাকে রক্ত দাও,আমি তোমাকে স্বাধীনতা দেব।” এই আহ্বান আজও তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে অনুরণিত হয়।
 
আমাদের এই ভূমি শুধু জন্মভূমি নয়,  এটি ইতিহাসের এক জীবন্ত সাক্ষী। যেখানে নেতাজির মতো মহাপুরুষের পদচিহ্ন অমর হয়ে আছে, সেখানে স্বাধীনতার চেতনা কখনও নিঃশেষ হতে পারে না। ২১শে অক্টোবর তাই কেবল একটি দিন নয়, এটি স্বাধীন ভারতের আত্মমর্যাদার প্রতীক, এক অনন্ত প্রেরণার উৎস।