অসমের এক বাঙালি যুবক হয়ে পড়েছেন দেবদূত। তিনি ভাষা জাতির গন্ডি পেরিয়ে হয়ে পড়েছেন এক অনন্য মানবতার প্রতীক। রক্তদান জীবন দান এইটাই বাস্তব সত্য। নিজের অজান্তে হিন্দি চলচ্চিত্রের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিগত ৩৬বছর থেকে রক্ত দান করে যাচ্ছেন।
তিনসুকিয়ার যুবক মৃন্ময় দাশ। আওয়াজ দ্য ভয়েস এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ১৯৮৯সালের ১৪, আগষ্ট তিনি ডিব্রুঘর মহাবিদ্যালয়ে প্রথম রক্ত দান করেন। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রক্ত দান করতে শুরু করেন।
পরে উপনীত বয়সে জানতে পারেন রক্ত দান মানুষের জীবনের জন্য কত জরুরী। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে নিজের মহানতার আরো একটি দিক তুলে ধরেন। জীবনের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং অন্যদের জন্য ভালোবাসা তাঁকে অনুপ্রাণিত করে প্রতিদিন নতুন আশার সঞ্চার করেছে তাঁর মনে ও প্রাণে।
মৃন্ময়ের জন্য রক্তদান কেবল একটি দান নয়, এটি এক জীবন ধারণের বার্তা। তিনি জানানো মতে, তাঁর রক্তদান কর্ম শুধুমাত্র নিজের সম্প্রদায় নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকেনি। প্রতিষ্ঠিত হিন্দু-বাঙালির সন্তান হলেও তিনি মুসলিম, বৌদ্ধ, আদিবাসী সহ অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন উদ্ধারে রক্ত দানের কাজ করেছেন। জাতপাতের তার কোনও রূঢ়তা নেই মৃন্ময়ের হৃদয়ে।
কিরেন রিজিজুর সঙ্গে রক্তদানকারী মৃন্ময় দাশ
রক্ত দানে তিনি আজ অবধি কোন জাত পাতের বিচার করেননি। প্রায় ৯২ইউনিট রক্ত দানের পর তিনি জানান, আগামী আরো ৮বছর অবধি তিনি এই মানব সেবার কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহী। তারই মধ্য দিয়ে মানবতার এক অনন্য অধ্যায় সৃষ্টি করেছেন তিনি, যে অধ্যায় আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণাময়।
রক্তদানের জন্য প্রাপ্ত মৃন্ময় দাশের কিছু পুরস্কার
মৃন্ময় দাশের এই গল্প আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ভাষা বা ধর্মের বাঁধন ছাড়িয়ে আমরা সবাই এক মানবিক এক সম্প্রদায়। রক্তদান জীবন দান, এবং এই অনন্য মানবতার আলোকে আলোকিত হতে পারে আমাদের এই সমাজ।