গুয়াহাটি
শীত নামলেই শরীর ঢাকতে ভারী পোশাক, হাতে গরম চা আর প্লেটে একটু বেশি ভাজাভুজি, এই নিয়েই যেন শীতের সুখ। কিন্তু এই আরামের আড়ালেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ওজন, যা টের পাওয়া যায় বসন্তের শুরুতে। প্রশ্ন উঠছে, কেন বছরের এই সময়টাতেই ওজন বাড়ার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি? আর কীভাবে সামান্য সতর্কতায় এই বাড়তি কিলোগ্রামকে আটকানো যায়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীর বেশি ক্যালোরির চাহিদা অনুভব করে। ফলে ক্ষুধা বেড়ে যায় এবং উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের প্রতি ঝোঁক বাড়ে। শীতের পিঠে-পুলি, ভাজাভুজি ও মিষ্টিজাত খাবার এই সময়ে ওজন বাড়ানোর বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়া শীতকালে শারীরিক সক্রিয়তা অনেকটাই কমে যায়। ভোরে হাঁটতে বেরোতে আলস্য, জিমে যাওয়ার অনীহা এবং রোদ কম থাকার কারণে শরীর কম ক্যালোরি খরচ করে। এর সঙ্গে যোগ হয় দিনের আলো কমে যাওয়া, যা হরমোনের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলে এবং বিপাকক্রিয়া ধীর করে দেয়।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিও শীতকালে ওজন বাড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। পর্যাপ্ত রোদ না পাওয়ায় শরীরে ভিটামিন ডি কমে যায়, যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ও মেটাবলিজমে প্রভাব ফেলতে পারে বলে চিকিৎসকদের মত।
তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কিছু সহজ অভ্যাস মেনে চললেই শীতকালে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত হালকা ব্যায়াম, যেমন বাড়ির মধ্যেই যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচিং, অত্যন্ত উপকারী। পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় বেশি করে শাকসবজি, ফল, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা।
গরম পানীয় হিসেবে চিনি ছাড়া গ্রিন টি বা লেবু-গরম জল বেছে নেওয়া, পর্যাপ্ত জল পান করা এবং রাতে ভারী খাবার এড়িয়ে চলাও ওজন বাড়া রোধে সাহায্য করে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাও সমান জরুরি।
সব মিলিয়ে বলা যায়, শীতকাল ওজন বাড়ার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সচেতনতা ও সঠিক জীবনযাপনই পারে এই সমস্যাকে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে।