মানুষের আয়ু ২৫০ বছর পর্যন্ত বাড়াতে সক্ষম জাপানি বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার

Story by  Sudip sharma chowdhury | Posted by  Aparna Das • 17 d ago
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি
 
সুদীপ শর্মা চৌধুরী / গুয়াহাটি 

বিজ্ঞান জগতে এক যুগান্তকারী ঘোষণা, জাপানি গবেষকরা উদ্ভাবন করেছেন এমন এক নতুন প্রজন্মের DRG (Degenerative Resistance Gene) প্রযুক্তি, যা মানুষের আয়ু সম্ভাব্যভাবে ২৫০ বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে।
 
দশকের পর দশক ধরে বার্ধক্য, কোষ পুনর্গঠন ও দীর্ঘায়ু বিষয়ে গবেষণার ফলেই এই বিপ্লবী আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে।
 
বার্ধক্য রোধে নতুন দিগন্ত
 
এই DRG প্রযুক্তি মূলত কাজ করে কোষের ক্ষয় ও বার্ধক্যজনিত ক্ষতি ধীর করে দেওয়ার মাধ্যমে। এটি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিকে রক্ষা করে, কোষের পুনর্জন্ম প্রক্রিয়া বাড়ায় এবং কোষের স্বাভাবিক ক্ষয়প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। এর ফলে মানুষ শুধু দীর্ঘজীবীই হবে না, বরং বৃদ্ধ বয়সেও থেকে যাবে তরতাজা ও কর্মক্ষম।
 
গবেষক দলের প্রধান ড. হিরোশি তাকাহাশি জানান, “আমাদের লক্ষ্য রোগের চিকিৎসা নয়, বরং রোগের উৎপত্তি রোধ করা। DRG কোষের স্তরে কাজ করে, ফলে বার্ধক্যের প্রভাব শুরুই হতে পারে না।”
 
জীবনের মান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি
 
প্রচলিত চিকিৎসা যেখানে রোগ দেখা দেওয়ার পর তা নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেয়, সেখানে DRG প্রযুক্তি বার্ধক্যের মূল উৎসে আঘাত করে। গবেষকদের মতে, এটি কেবল আয়ু বাড়াবে না, বরং জীবনের মানও উন্নত করবে, কমাবে ডিমেনশিয়া, হৃদরোগ ও অস্টিওপরোসিসের মতো বয়সজনিত রোগের ঝুঁকি।
 
ভাবা যায়, ১৫০ বছরের জন্মদিন উদ্‌যাপন করছেন কেউ, অথচ শরীর ও মন ৫০ বছরের মতোই তরতাজা! এমন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখাচ্ছে এই নতুন প্রযুক্তি।
 
সামাজিক কাঠামোয় বড় পরিবর্তন
 
গবেষকদের মতে, এই আবিষ্কার মানবসমাজের কাঠামোই বদলে দিতে পারে। কর্মজীবন, অবসর, পরিবার পরিকল্পনা, সব কিছুই নতুনভাবে ভাবতে হবে। দীর্ঘ আয়ুর ফলে মানুষ আরও বেশি সময় ধরে কাজ করতে, শিখতে ও নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারবে। শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রেও এটি নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে, কারণ শতাব্দীজুড়ে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান সঞ্চয় করে মানুষ সমাজে আরও বড় অবদান রাখতে পারবে।
 
পরীক্ষার প্রাথমিক ধাপেই সীমাবদ্ধ
 
তবে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে এই প্রযুক্তি এখনো পরীক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা যাচাই করতে দীর্ঘমেয়াদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল প্রয়োজন হবে। তবুও এই আবিষ্কার ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে, কারণ এটি মানবজীবনের সীমা ও সম্ভাবনার ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
 
ভবিষ্যতের দিগন্তে আশার আলো
 
বিশেষজ্ঞদের মতে, DRG প্রযুক্তি যদি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে মানব সভ্যতা প্রবেশ করবে এক নতুন যুগে, যেখানে বার্ধক্য আর সীমাবদ্ধতা নয়, বরং নিয়ন্ত্রণযোগ্য এক জৈবিক প্রক্রিয়া।
 
এই গবেষণা প্রমাণ করে, বিজ্ঞানের পরিধি সীমাহীন, এবং মানুষ এখনো তার নিজের ভবিষ্যত গড়ার ক্ষমতা রাখে।


শেহতীয়া খবৰ