প্রকল্পটির উদ্বোধনের সময় ড. আন্দরাবির চোখে জল এসে যায়। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য ড. গুলাম নবি হালিম ও সৈয়দ মোহাম্মদ হোসেন হাক্কানি, এছাড়াও বিশিষ্ট আলেম মৌলানা গুলাম রাসুল হামি, মৌলানা মোহাম্মদ আশরাফসহ অনেকে।
সংখ্যালঘু বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু, যিনি এর আগে দরগাহ সফর করেছিলেন, ড. দরাক্ষান আন্দরাবিকে এই ঐতিহাসিক প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি এক্স প্ল্যাটফর্মে হজরতবল নিয়ে নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও শেয়ার করেন।
তিনি লেখেন, “হজরতবল দরগাহর ঐতিহাসিক সংস্কারকাজে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ড. দরাক্ষান আন্দরাবি ও জম্মু-কাশ্মীর ওয়াকফ বোর্ডকে অভিনন্দন। ১৯৬৮ সালের পর এটাই দরগাহর প্রথম বড় ধরনের অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন। নতুন নকশায় আধুনিকতা ও কাশ্মীরি ঐতিহ্যবাহী শিল্পের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এটি জম্মু-কাশ্মীরের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের জন্য এক গর্বের সাংস্কৃতিক মাইলফলক…।”
বিশেষ উপলক্ষে, যেমন ঈদে, সমগ্র উপত্যকা থেকে ভক্তরা দরগাহে ভিড় করেন। এ সময় মোইয়া মুকাদ্দাস বা মহানবীর পবিত্র নিদর্শন, তাঁর পবিত্র চুলের একটি গোছা, কাঁচের বাক্সে সংরক্ষিত অবস্থায় ভবনের প্রথম তলা থেকে জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয়। দরগাহতে বার্ষিক সাত দিনের উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, যা শনিবার থেকে শুরু হয়ে শুক্রবারে শেষ হবে।
ড. দরাক্ষান আন্দরাবি বলেন, “মিলাদ উদ্যাপনের প্রাক্কালে এই প্রকল্প উদ্বোধন করা এক বিশাল আশীর্বাদ। অত্যাধুনিক নির্মাণকাজ দরগাহকে দেশের এবং অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর পীঠস্থানে পরিণত করেছে।”
তিনি জানান, এটি ছিল তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প, আর এর সমাপ্তি তাঁর হৃদয়কে কৃতজ্ঞতায় পূর্ণ করেছে, “আল্লাহ আমাদের সাহায্য করেছেন বলেই এটি সম্ভব হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, প্রথম দিন থেকেই তিনি ও তাঁর দল ভক্তদের সুবিধার্থে দরগাহর উন্নত ও সুন্দর অবকাঠামো গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
তিনি ঘোষণা করেন যে ওয়াকফ বোর্ডের অবকাঠামো ও উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো অব্যাহত থাকবে। এ উপলক্ষে মেগা প্রকল্পটির ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারপার্সন ড. দরাক্ষান আন্দরাবি দরগাহতে
ডাল লেক ও জাবরওয়ান পাহাড়শ্রেণির পাদদেশে অবস্থিত হজরতবল দরগাহ কাশ্মীরের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় পীঠস্থান। প্রতি বছর মিলাদ উপলক্ষে প্রায় এক লক্ষ ভক্ত দরগাহতে সমবেত হন। রাজধানী শ্রীনগরসহ উপত্যকার দূর-দূরান্ত থেকে আগত হাজারো তীর্থযাত্রী এখানে উপস্থিত হয়ে মহানবীর পবিত্র নিদর্শনের “দিদার” লাভ করেন।
উপত্যকায় আগত রাষ্ট্রনায়ক ও বিশিষ্ট অতিথিদের জন্যও এটি দর্শনীয় এক অবিস্মরণীয় স্থান। কাশ্মীরে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার আগে এই দরগাহ ছিল জম্মু-কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের কার্যকলাপের কেন্দ্রবিন্দু।