অনিকা মহেশ্বরী / নয়া দিল্লি
অনেক দিন আগের কথা, বলিউডের বড় পর্দায় এমন কয়েকজন শিশু শিল্পী ছিলেন, যারা তাদের ভদ্র স্বভাব ও শক্তিশালী অভিনয়ের মাধ্যমে সবার হৃদয় জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। শৈশবেই তারা তারকা হয়ে উঠেছিলেন এবং আজ সেই শিল্পীরা বড় পর্দায় নিজেদের অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী আসন দখল করে আছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই শিশু শিল্পীদের কথা, যাদের শৈশব শুধু অলৌকিকতায় ভরা ছিল না, আজ বড় পর্দাতেও তারা সুপারস্টার হয়ে উঠেছেন।
১. শচীনের মুখের হাসি
একসময় শচীন নামের একটি ছোট ছেলে বলিউডের সবচেয়ে বড় মঞ্চে পা রাখে। সে ছিল অত্যন্ত নম্র ও মিষ্টি স্বভাবের, কিন্তু তার অভিনয় দক্ষতা ছিল গভীর এবং শক্তিশালী। শচীন তার প্রথম ছবি "বাগী"-তে অভিনয় করেছিলেন। শৈশবে তিনি তার নম্র স্বভাব ও অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয় জয় করেন।
শৈশবের অভিনেতা শচীন
কিন্তু শচীনের সাফল্যের শুরু হয়েছিল শৈশবেই। একজন দক্ষ শিশু শিল্পী হিসেবে তাকে ‘কর্মা’ চলচ্চিত্রে দেখা গিয়েছিল। এরপর তিনি বহু ছবিতে শিশু শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন, কিন্তু যখন তিনি বড় পর্দায় পদার্পণ করেন, তখনই তার সাফল্য তাকে সুপারস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।
আজ শচীন বলিউডের অন্যতম বড় তারকা হিসেবে পরিচিত এবং তার অভিনয়ের প্রশংসা বিশ্বজুড়ে হয়। তার যাত্রা শেখায় যে শিশুরাও সফল হতে পারে—শুধু তাদের সঠিক দিশায় এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করতে হয়।
২. করিশ্মা কাপুর: শৈশব থেকে সুপারস্টার
শৈশব থেকেই বলিউডে বিশেষ স্থান করে নিতে সক্ষম হওয়া আরেক শিল্পী হলেন করিশ্মা কাপুর। কাপুর পরিবারে জন্মানো এই ছোট্ট তারকা তার প্রথম ছবি ‘প্রেম কুমারী’–তে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, কিন্তু দ্রুতই তিনি দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন।
চল্লিশ বছর বয়সে করিশ্মা আজও বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী। তার অভিনয় ও নৃত্য আজও সবাইকে মুগ্ধ করে। ‘রাজা বাবু’, ‘দিল তো পাগল হ্যায়’, এবং ‘হিরো নং ১’–এর মতো চলচ্চিত্রে তার অভিনয় আজও সবার মনে অমলিন।
করিশ্মা কাপুরের শৈশবের একটি ছবি
করিশ্মার শৈশব ছিল শিল্প–সংস্কৃতিতে ভরা। যার জাদু আজও পুরো বিশ্বে অব্যাহত আছে। তার এই যাত্রা আমাদের শেখায়—কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় সংকল্প থাকলে যেকোনো বয়সে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
৩. তন্ময়: শৈশবের অভিনেতা, আজকের চলচ্চিত্র তারকা
তন্ময় নামে একটি শিশুর ‘শাকা লাকা বুম বুম’ নামের সিরিজে অভিনয় করেছিল। তন্ময়ের মুখ টিভির পর্দায় খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং সে তার অভিনয় দিয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেছিল। তন্ময়ের ভদ্র স্বভাব এবং অভিনয় তাকে একটি বিশেষ পরিচিতি দেয়।
বড় হওয়ার পর তন্ময় চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করে এবং সাফল্য অর্জন করে। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তন্ময়ের সাফল্য দেখায় যে শৈশবে পাওয়া সুযোগগুলো সঠিকভাবে কাজে লাগালে ভবিষ্যতে বড় তারকা হয়ে ওঠা সম্ভব।
৪. জারিন খান: শাহরুখ খানের সঙ্গে শৈশবের এক তারকা
জারিন খান শৈশবেই অভিনয় শুরু করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি চলচ্চিত্র জগতের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। তিনি শাহরুখ খানের সঙ্গে ‘বীর’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন এবং সেই অভিনয়ের মাধ্যমেই তিনি আলোচনায় উঠে আসেন।
শৈশবের জারিন খান
জারিনের ‘হেট স্টোরি ৩’ এবং ‘আলী বাবা’–র মতো চলচ্চিত্র তাকে বলিউডের অন্যতম বিশিষ্ট অভিনেত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। জারিনের এই যাত্রা প্রমাণ করে যে কোনো শিল্পী যদি শৈশবেই কঠোর পরিশ্রম করে সাফল্যের পথে এগোতে থাকে, তাহলে বড় হয়েও সে নিজের পরিচয় শক্তভাবে গড়ে তুলতে পারে।
৫. মহসিন খান: টিভি থেকে চলচ্চিত্র জগতে
ছোটবেলায় একটি ছোট টিভি শো–তে অভিনয় করা বলিউডের আরেক অভিনেতা মহসিন খান আজ বড় পর্দায় নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছেন। শৈশবে তাকে শুধু ছোট পর্দায়ই দেখা যেত না, চলচ্চিত্র জগতেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
বলিউড অভিনেতা মহসিন খান
মহসিন তার কঠোর পরিশ্রম এবং চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেছিলেন এবং আজ তিনি টিভি ও চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম বড় নাম হিসেবে পরিচিত। তার সাফল্য আমাদের শেখায় যে প্রতিটি শিশু তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারে—শুধু তাদের কঠোর পরিশ্রম এবং সংগ্রামের প্রয়োজন।
এই কাহিনী আমাদের শেখায় যে প্রতিটি শিশু তাদের পরিশ্রম, নিষ্ঠা এবং স্বপ্নের শক্তিতে যেকোনো ক্ষেত্রে সফল হতে পারে। যদি কোনো শিশু শৈশবে সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সুযোগ পায়, তবে সে বড় হয়ে একজন সুপারস্টার হয়ে উঠতে পারে।
