দেবকিশোর চক্রবর্তী
ভারতীয় সঙ্গীতজগতের জনপ্রিয় ‘আগুন পাখি’ নচিকেতা চক্রবর্তীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে পরিবার ও চিকিৎসক সূত্রে জানা গেছে। গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থতার কারণে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাঁর শারীরিক জটিলতার খবর সামনে আসার পর ভক্ত, শিল্পীমহল ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে উদ্বেগ বাড়লেও বর্তমানে অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হওয়ায় স্বস্তির সঞ্চার হয়েছে।
চিকিৎসাসংক্রান্ত সূত্র জানায়, অসুস্থতার শুরু থেকেই নচিকেতাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা–নিরীক্ষা সম্পন্ন করার পর তাঁর হৃৎস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাসসহ গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় সূচকগুলো এখন স্বাভাবিক অবস্থার দিকে ফিরছে। এক চিকিৎসক জানান, “তিনি এখন অনেকটাই স্থিতিশীল, দেওয়া চিকিৎসায় ভালো সাড়া দিচ্ছেন। আপাতত বিশ্রামই তাঁর সবচেয়ে জরুরি চিকিৎসা।”
পরিবার থেকেও ইতিবাচক বার্তা এসেছে। নচিকেতার মেয়ে ধানসিঁড়ি জানান, “বাবা আগের চাইতে এখন অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছেন। চিকিৎসকের নির্দেশনা মেনে সবকিছু চলছে, আর তিনি মানসিকভাবেও যথেষ্ট ইতিবাচক আছেন।” তাঁর এই বক্তব্যে ভক্তদের মধ্যে আরও স্বস্তি ফিরে এসেছে। পরিবার জানিয়েছে, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী আপাতত বাহিরের সাক্ষাৎ সীমিত রাখা হয়েছে এবং পরিচর্যায় কোনও ফাঁক রাখা হচ্ছে না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নচিকেতার দ্রুত আরোগ্য কামনায় শুভেচ্ছা বার্তা, প্রার্থনা ও ভালোবাসায় ভরে উঠেছে। বাংলা সংগীতজগতের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পী হিসেবে তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে নচিকেতা তাঁর অসংখ্য গান, তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ, সমাজবাস্তবতার প্রতিফলন এবং মানবিক অনুভূতির কারণে শ্রোতাদের হৃদয়ে গভীর জায়গা করে নিয়েছেন। ফলে তাঁর অসুস্থতার খবরে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে শিল্পীসমাজে।
অনেক সহশিল্পী এবং সংগীত–ব্যক্তিত্ব বলেন, শিল্পীরা সমাজের সাংস্কৃতিক সম্পদ, তাঁদের সুস্থতা সাধারণ মানুষের আনন্দ ও সাংস্কৃতিক ধারাকে সমৃদ্ধ রাখার পূর্বশর্ত। তাঁরা আশা প্রকাশ করেন, সুস্থ হয়ে নচিকেতা আবারও নতুন সৃষ্টিকর্ম নিয়ে উপস্থিত হবেন শ্রোতাদের সামনে এবং আগের মতোই আপন সুরে মুগ্ধ করবেন সবাইকে।
চিকিৎসকদের মতে, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে আরও কয়েকদিন বিশ্রাম প্রয়োজন হবে। চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তি ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। নচিকেতার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যে মানসিকভাবে অনেকটাই স্বস্তিতে আছেন এবং ধীরে ধীরে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রিয় এই শিল্পীর সুস্থতার পথে এগিয়ে যাওয়ার খবর সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে। ভক্ত–অনুরাগী, পরিবার ও শিল্পীমহলের একটাই প্রত্যাশা—খুব দ্রুত নচিকেতা চক্রবর্তী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবারও মঞ্চে ফিরে আসবেন, আর ‘আগুন পাখি’র সুরে আবার উচ্ছ্বসিত হবে সংগীতপ্রেমীদের মন।