আছাদ আলী / মঙ্গলদৈ
ইতালির অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালাব্রিয়া’-তে গবেষক বিজ্ঞানী পদে নিযুক্তি পেলেন দরং জেলার চেনিবারী গ্রামের ডঃ রুহুল আমিন হাজরিকা। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে কীভাবে ক্যানসার রোগ শনাক্ত করা যায়, সেই বিষয়ে গবেষণা ও অধ্যাপনা করবেন। তাঁর এই গবেষণা মানব সমাজ এবং গোটা চিকিৎসা ক্ষেত্রের জন্য যুগান্তকারী হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
চেনিবারী গ্রামের কৃতি শিক্ষক বছিরুদ্দিন আহমেদ হাজরিকা এবং রাবিয়া খাতুনের সুযোগ্য সন্তান রুহুল আমিন হাজরিকার এই সাফল্য জেলাজুড়ে আনন্দের জোয়ার এনেছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল রাজাপুখুরীর নিকটবর্তী চেনিবারী থেকে ইতালির মতো উন্নত দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হওয়া নিঃসন্দেহে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এক আশাব্যঞ্জক সংবাদ।
স্থানীয় অসমীয়া মাধ্যম বিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক গবেষণার শীর্ষে ডঃ রুহুল আমিন হাজরিকার অনুপ্রেরণাদায়ক যাত্রা।
তাৎপর্যপূর্ণ যে, ডঃ রুহুল আমিন হাজরিকা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে হাইস্কুল পর্যায় পর্যন্ত স্থানীয় সরকারী বিদ্যালয়ে অসমীয়া মাধ্যমেই পড়াশোনা করেন। মাধ্যমিকে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হওয়ার পরই তিনি মঙ্গলদৈ শহরে যান এবং সেখানে মঙ্গলদৈ সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে অধ্যয়ন করেন।
পরবর্তী পর্যায়ে তিনি শিলঙের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ‘নর্থ ইস্ট হিলস ইউনিভার্সিটি (NEHU)’ থেকে পর্যায়ক্রমে বি-টেক, এম-টেক এবং পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
শিক্ষাজীবন শেষ করে রুহুল আমিন দেশে চতুর্থ র্যাঙ্কিংয়ে থাকা ব্যাঙ্গালোরের মণিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। সেই পদে কাজ করার মধ্যেই তিনি ইতালির ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালাব্রিয়া’ থেকে গবেষক বিজ্ঞানী পদে আমন্ত্রণ পান। উল্লেখযোগ্যভাবে, সেখানে তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ক্যানসার রোগ কীভাবে শনাক্ত করা যায়, সে বিষয়ে গবেষণা ও অধ্যাপনা করবেন।
ডঃ রুহুল আমিন হাজরিকা অসমের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন,“পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছাতে শিক্ষার মাধ্যম বা দারিদ্র্য কোনো বাধা হতে পারে না। আমি নিজে প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অসমীয়া মাধ্যমের সরকারি বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি এবং পিএইচ.ডি পর্যন্তও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই শিক্ষা লাভ করেছি।”