শুধু ফুটবল নয়, ব্রিটিশ ভারতে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব

Story by  atv | Posted by  Sudip sharma chowdhury • 12 d ago
মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব
মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব

শান্তিপ্রিয় রায়চৌধুরী:

মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব। একটি ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাচীন ক্রীড়া ক্লাব, যা  ফুটবল খেলার জন্য বিখ্যাত। তবে ১৮৯১ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাবটি শুধু একটি ফুটবল ক্লাব নয়, এটি ব্রিটিশ ভারতে মুসলমানদের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এর একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে। তা আমরা কতজনই বা জানি। আসুন ভারতের ঐতিহ্যবাহী এবং প্রাচীন ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানটির ফেলে আসা দিন গুলোর দিকে একবার চোখ রাখি। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবটা শুধুমাত্র একটা ফুটবল দলে সীমাবদ্ধ ছিল না, ছিল আপামর মুসলিম সম্প্রদায়ের আবেগের একটা প্রতীক। কিন্তু তা কীভাবে হয়ে উঠলো, সেটাই জানবো এই প্রতিবেদনে।


এর হদিশ পেতে আমাদের বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশক গুলোর ইতিহাসের দিকে চোখ রাখতে হবে। অন্য বিষয়গুলির মধ্যে, ফুটবল এই সময় থেকে আরও বেশি করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে প্রতিফলিত হতে থাকে। এই ঘটনা তখনকার মূল রাজনীতিকেও রাঙিয়ে দিয়েছিল। ক্রমে ক্রমে কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব উজ্জীবিত মুসলিম পরিচিতির এক প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে। আর কেবলমাত্র আভিজাত মুসলিমদের মধ্যে আবদ্ধ থাকেনি, তা মধ্য ও নিম্নশ্রেণীর মুসলিমগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। ক্লাবের পতাকার মধ্যেও একটা ধর্মীয় ছাপ দেখা যায়, এর ফলে গোটা ক্রিয়াকাণ্ডের সঙ্গে নিম্নবিত্ত মুসলমানও একাত্ম বোধ করতে থাকেন। বৃহত্তর রাজনীতির আঙিনায় মুসলিমগণ এই সময় থেকেই যেমন প্রবলতর ছাপ রাখতে শুরু করলেন, তেমনই ফুটবলের ক্রীড়াঙ্গনে মহামেডান স্পোর্টিঙের বিজয়, ইসলামের বিজয় বলেই গণ্য হতো।

সমস্ত মুসলিমদের এক ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তাঁদের ক্ষমতার প্রদর্শনের জন্য মুসলিম উচ্চশ্রেণীরা (আশরাফ) কাজে লাগালো ফুটবলের এই গণ-উন্মাদনাকে। নিম্নবর্গের মুসলিমরা এই খেলাটির মধ্যে দিয়ে তাদের দীর্ঘ-উপেক্ষিত বঞ্চনার উত্তর পেতে শুরু করলেন। এভাবেই, উচ্চ-নীচ দুই বর্গের মুসলিমরা ফুটবলের মধ্যে দিয়ে তাদের সামাজিক প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পান।

এবার চোখটা ফেরানো যাক ১৮৮০-র দশকের দিকে। বৃটিশদের আনা আউটডোরের গেমণ্ডলির প্রতি মুসলিম সমাজ আকৃষ্ট হতে থাকে। ১৮৮৭-তে প্রতিষ্ঠিত হল প্রথম মুসলিম ক্লাব, নাম ‘জুবিলি ক্লাব’। প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন খানবাহাদুর নবাবজাদা আমিনুল ইসলাম,মালদহের খানসাহেব আব্দুল গনি,বর্ধমানের মৌলবী মােহম্মদ  আসীন প্রমুখ। যদিও তাদের অনভিজ্ঞতা ও কিছুটা আর্থিক কারণে খুব তাড়াতাড়ি ক্লাবটির পতন হয়। বছর দেড়েকের মধ্যে ‘ক্রেসেন্ট ক্লাব’ নামে তার পুরুজ্জীবন ঘটলালো এবং পরে ক্লাবের নাম বদল করে হল ‘হামিদিয়া ক্লাব’।
 

মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের গৌরবময় ইতিহাস

শেষ পর্যন্ত ১৮৯১ সালে, বিচারপতি আমীর আলির সভাপতিত্বে ‘কলিকাতা মাদ্রাসা’র এক সভায় নামটি পরিবর্তন করে রাখা হল ‘মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব’। প্রথম বাৎসরিক  প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্লাবের  ঘোষিত লক্ষ্য ছিল মহান ও সুদুরপ্রসারী : “ফুটবল, হকি, ক্রিকেট, টেনিস, ব্যাডমিন্টন, টেবলটেনিস, বিলিয়ার্ডস, সম্তরণ প্রভৃতি বিভিন্ন ক্রীড়ার মধ্যে দিয়ে সদস্যদের স্বাস্থ্যোন্নতি ও টিমস্পিরিট গড়ে তোলা এবং এক ক্রীড়াপরম্পরার সৃষ্টি।” প্রথম থেকেই মুসলিম অভিজাত শ্রেণীর মধ্যেই থেকে আর্থিক পৃষ্ঠপোষকতা সংগ্রহে উদ্যোগী হয় ক্লাব এবং  সফলও হয়। দ্বিতীয় বছরে ক্লাবের সভাপতি হন বাঙলার প্রধান বিচারপতি স্যার ফ্রান্সিস ম্যাগেলান, এবং শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তার উপর দীর্ঘ এক ভাষণও দেন স্যার জাহিদ সুরাবদি। বাঙলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার জন উডবার্ন তৃতীয় বছরে সভাপতিত্ব করেন। এই সময়ে ঢাকার দানবীর নবাব আসাহনুল্লা বাহাদুরের কাছে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হলে উনি নিরাশ করেননি। প্রিন্স মহম্মদ বখতিয়ার শাহ এবং নবাব মির্জা সাজ্জাদ আলি বেগও ক্লাবকে প্রভূত দান করেন। ১৮৯৬-তে আলিগড়ের মহামেডান এংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ’র সঙ্গে আনুষ্ঠানিক  যোগাযোগ স্থাপনা করে এই ক্লাব। কলকাতার মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব তাদের সঙ্গে অনেকগুলি ম্যাচও খেলে।

উনবিংশ শতাব্দীর শেষের সময় থেকে মৌলবী আব্দুল গনির সম্পাদনায়, নিজস্ব মুখপত্র ‘ক্যালকাটা মাস্থলি’ পত্রিকা প্রকাশ করল ক্লাব, এবং তাদের জন্যে কলকাতা ময়দানে নিজস্ব এক ক্রীড়াঙ্গন করে দিল কলকাতা পুলিশ কর্তৃপক্ষ। রেড রোডের ধারে সেই ক্লাব আজও  সাক্ষী হয়ে আছে। যেখানে মহমেডান দলের লিগের খেলাগুলি হয়। এইভাবে, বিংশ শতাব্দী শুরু থেকেই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ক্রীড়া ও  প্রমোদের পীঠস্থান হিসেবে মহমেডান স্পাের্টিং ক্লাব ময়দানে দাড়িয়ে আছে।

মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কার্যালয়

১৯০৯ থেকে ১৯২৪ এর মধ্যে ক্লাবের ইতিহাস কিছুটা বিস্মৃতির ইতিহাস। সম্ভবত ক্লাব তখন এক উষর সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলো। এসময়ে ‘ওরিয়েন্টাল ক্লাব’ ও ‘মুসলিম ক্লাব’ নামে আরও দুটি মুসলিম ক্লাবের উদয় হয়, যারা  বাধ্য হয়ে মুসলিম আনুগত্যে ভাগ বসিয়েছিল। কিন্তু ১৯২৪-এ আরিফ খান ও এস. এ. রশিদ যুগ্ম-সম্পাদক হয়ে এলে, ক্লাবের চিত্রটা বদলে যায়। অবশ্য, ১৯১৭-র পর থেকে পর পর ম্যাচ হেরে ওরিয়েন্টাল ক্লাব হারিয়ে যায়। অবশেষে বিচারপতি আমীর আলি ক্লাব-প্রেসিডেন্ট হয়ে এলে এবং ১৯৩১ সালে এ. কে. আজীজ ও কাজী আশরাফ আলী যুগ্ম-সম্পাদক হয়ে এলে ক্লাবের স্বর্ণযুগ শুরু হয়। ১৯৩৪ সালে মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব প্রথম ডিভিশনে উন্নীত হল এবং সেই থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচবার কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্থাপন করলো এক অতুল কীর্তির জয়গাথা।

মহমেডান স্পোর্টিং ১৯৪০ সালে প্রথম ভারতীয় ক্লাব হিসেবে মর্যাদাবাহী ডুরান্ড কাপ জেতে এবং সে-বছরেই জেতে রােভার্স কাপ। তার আগেই তারা ১৯৩৬ সালে দ্বিতীয় ভারতীয় দল হিসেবে আই এফ এ শিল্ড জেতে। এই সময় থেকেই মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাব এক জাতীয়-প্রতীক হয়ে ওঠে, এবং সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানেরা ক্লাবটির সঙ্গে নিজেকে একাত্ম বােধ করতে থাকেন।  ক্রীড়াঙ্গনে ক্লাবের বিজয়ে তাঁরা গৌরবান্বিত হন, আর পরাজয়ে হতাশ হতেন। বৃহত্তর প্রেক্ষিতে, এই সময় থেকেই ভারতীয় মুসলিমের স্বজাত্যাভিমান গড়ে উঠতে থাকে বিশেষভাবে। ক্লাবের উপর্যুপরি বিজয় তাদের গর্বিত করে তােলে।

বিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিক থেকে মােহনবাগান ক্লাব যেমন ভারতীয় জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল, তেমনই ১৯৩০-এর দশকে মহামেডান স্পাের্টিং ক্লাবও হয়ে ওঠে মুসলিম জাতীয়তাবাদের প্রতীক! মহমেডান স্পাের্টিং ক্লাবের প্রধান পৃষ্ঠপােষক ও কর্মকর্তারা ছিলেন মূলত ভূম্যধিকারী আশরাফ শ্রেণীভুক্ত ও প্রাচীন অভিজাত, রাজন্যবর্গের বংশধর এবং কলকাতার ধনী ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা। সকলেই অবঙ্গভাষী। তাদেরই প্রভাবে ও আর্থিক সাহায্যে ক্লাবটি চারাগাছ থেকে ক্রমে এক মহীরুহে পরিণত হয়। একাধিক বৃটিশ গভর্নরও ছিলেন মহমেডান স্পাের্টিং ক্লাবের শুভানুধ্যায়ী, যার মধ্যে দিয়ে ইংরেজের ‘Devide and Rule’ নীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সেই সময় খাজা নাজিমুদ্দিন, নুরুদ্দিনের মতাে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ক্লাবের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। রাজনীতিবিদেরা এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থেকে নিজেদের মান্য নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার একটা সুযোগ পেতেন। 

১৯৩৫ সালের পরে ক্লাবের নতুন সংবিধান গঠন হল এবং  অবাঙালীরাই মূল জায়গাটা দখল করে রাখলেন।আজীবন-সদস্য হলেন  খাজা নাজিমুদ্দিন (সভাপতি), এম এ ইস্পাহানি (নির্দেশক), স্যার হাজী দাউদ (কোষাধ্যক্ষ), খান বাহাদুর এম আজিজুল হক, হাজী দোস্ত মােহম্মদ, ইব্রাহিম গালাম হুসেন, মহম্মদ সফি, এবং কে নুরুদ্দিন (সম্পাদক)। মহামেডান স্পাের্টিং-এর খেলােয়াড়রা কোয়েটা, ফৈজাবাদ, দিল্লি, হায়দরাবাদ, ব্যাঙ্গালােরের মতাে সর্বভারতীয়স্তর থেকে উঠে আসতেন, এবং সকলেই অবাঙালী। ক্লাবটি একবার মুসলিম প্লেয়ারদের আখড়া হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেলে অন্য ক্লাবের মুসলমানেরাও এখানে চলে আসতেন। মহমেডানের এই মুসলিম খেলোয়াড় আমদানীর নীতি শুরু থেকেই একধরনের পেশাদারিত্বের জন্ম দেয়, যা পরবর্তী কালে ফুটবলের মানােন্নয়নের সহায়ক হয়।

ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক এ কে আজিজের দুরদর্শীতায় ক্রীড়ানৈপুণ্যের ক্ষেত্রে এই পেশাদারিত্ব আরও এগিয়ে যায়। তার পরিকল্পানুযায়ী খেলােয়াড়রা বৃষ্টিভেজা মাঠে বুট পরে খেলা শুরু করে দেন। এই একটি সিদ্ধান্ত ছিল তিরিশের দশকে ক্লাবের ক্রমাগত সাফল্যের এক প্রধান চাবিকাঠি। ক্লাবের দর্শককুলের মধ্যেও ছিল একটা বড়াে বিভাজন। সদস্য গ্যালারিতে বসতেন অল্পসংখ্যক গণ্যমান্য আশরাফগণ। দর্শকদের সিংহভাগ ছিলেন অন্যপ্রদেশাগত নিম্নবর্গের অবাঙালী মুসলিম।

এদিকে মুসলিমপ্রধান এলাকার বৃহৎ প্রাসাদ থেকে বিড়ির দোকানে পর্যন্ত খেলােয়াড়দের মস্ত মস্ত তসবীর টাঙিয়ে রাখা হতো এবং মিস্ত্রিরা পর্যন্ত যন্ত্র চালাতে চালাতে ক্লাবের তারিফে দুকলি গান গেয়ে উঠতেন। সেকালের বহু উর্দু  কাগজে,পত্রিকায় এমন অনেক ক্লাবস্তুতির পংক্তি ছাপা হয়েছে, যা থেকে বােঝা যায় মহমেডান ক্লাব তাদের হৃদয়ের কতখানি জায়গা জুড়ে ছিল। কোনাে ম্যাচে ক্লাব তাই আশানুরূপ ফল না করতে পারলে আবেগতাড়িত সমর্থকরা প্রায়শঃই মারমুখী হয়ে উঠতেন। 

১৯৩৪ সালে প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে কলকাতা লিগ ফুটবল জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করলেও, মহমেডান স্পাের্টিং কিন্তু ১৯১১-এ মােহনবাগানের প্রথম শিল্ড বিজয়ের মতাে কোনাে জাতীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করেনি। এ জয় তাদের কাছে ছিল ইসলামের জয়, ভারতীয়ের জয় নয়। এই জয় অবশ্য বঙ্গীয় মুসলমানের সাম্প্রদায়িক চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল, যদিও ক্লাবের ব্যবস্থাপক থেকে খেলােয়াড়গণ সকলেই ছিলেন অবাঙালী। ১৯৩০-এর মাঝের দশক থেকে বহু সংবাদপত্রর রিপাের্ট এ পাওয়া যায় কীভাবে সুদূর গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে ক্লাবের খেলা নিয়ে উন্মাদনার সৃষ্টি হতাে ও ক্লাবের বিজয় পালিত হতাে।

অন্যদিকে, নিছক ফুটবলের ঊর্ধ্বে উঠে মহমেডান ক্লাবের এই ইসলামী পরিচিতির বাড়াবাড়ি-রকমের প্রদর্শনকে বাঙলা ও ইংরেজি ভাষার জাতীয়তাবাদী প্রেস হেয় চোখে দেখতাে। মধ্য তিরিশের দশক থেকে ক্রমে ক্রমে মহমেডান স্পোর্টিং-এর সঙ্গে অন্য হিন্দু ক্লাবগুলোর খেলায় সাম্প্রদায়িক লড়ালড়ি তুঙ্গে উঠতে থাকে। যদিও এর মধ্য দিয়ে এই ক্লাব কলকাতা ফুটবলে যে পেশাদারিত্ব নিয়ে এসেছিল সেই অবদান কিন্তু তুচ্ছ হয়ে যায় না। অসাধারণ ক্রীড়ানৈপুণ্য, টিমস্পিরিট ও ক্রমাগত জয়ের ধারা মহমেডান স্পাের্টিং ক্লাবকে স্বাধীনতার আগের সময়ের এক শ্রেষ্ঠ ফুটবলদল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।

এভাবে, নিম্নবর্গীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের সমর্থন পেতে পেতে, কলকাতার ফুটবল ক্ৰমশঃ সত্যই এক সাধারণ মানুষের খেলা হয়ে উঠলাে। আর এর অন্ধকার দিকটা? সেটা ছিল খেলার মাঠের হিংস্রতা, মারামারি, কাটাকাটি। তবে এটা অনস্বীকার্য যে, মহামেডান স্পােটিং ক্লাব যেভাবে উচ্চ ও মধ্যবিত্তের মাঝের বেড়া ভেঙে কলকাতা ফুটবলকে জনগণের খেলায় রূপান্তরিত করতে পেরেছিল তার কোনা তুলনা নেই, অন্য কোনাে ক্লাব কোনোদিনই তেমনটা পারেনি।


শেহতীয়া খবৰ