নয়াদিল্লি ঃ
অপারেশন সিঁদুরে জইশের কোমর ভেঙে দিয়েছিল ভারতীয় সেনা। মৃত্যু হয় জঙ্গি নেতা মাসুদ আজাহারের পরিবারের ১১ সদস্যের। সেই ধাক্কা সামলে ফের ঘর গোছানোর চেষ্টা করছে জইশ। সম্প্রতি, সংগঠনের ইতিহাসে প্রথমবার মহিলা ব্রিগেড তৈরির কথা ঘোষণা করে তারা। এবার জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সেই ব্রিগেডে যোগ দিয়েছেন পাঁচ হাজার মহিলা।
নিরাপত্তা বাহিনীর সন্দেহ, জইশ-ই-মহম্মদের নতুন মহিলা শাখা, জামাত-উল-মোমিনাত-এ প্রায় পাঁচ হাজারেরও বেশি মহিলাকে নিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে, ওই মহিলাদের মৌলবাদী শিক্ষা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই শাখার নিয়োগ প্রসঙ্গে পোস্ট করেছেন মাসুদ আজাহার। আজহার নিজের পোস্টে লিখেছে, “আল্লাহর কৃপায় কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পাঁচ হাজারেরও বেশি বেশি মহিলা যোগ দিয়েছেন। অনেক বোন জানিয়েছেন নিয়োগের পরেই তাদের মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে এবং তাঁরা জীবনের লক্ষ্য বুঝতে পেরেছে। জেলা ইউনিট গঠন করা হবে, প্রতিটি জেলায় একজন মুন্তাজিমা (ব্যবস্থাপক) থাকবে এবং কাজ বিতরণ করা হবে।”
গত ৮ অক্টোবর বাহাওয়ালপুরের মারকাজ উসমান-ও-আলিতে জইশের মহিলা শাখা ‘জামাত-উল-মুমিনাত’ গঠনের কথা ঘোষণা করেছিল মাসুদ আজহার। এরপর গত ১৯ অক্টোবর সংগঠনটি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের রওলকোটে নতুন ইউনিটের জন্য মহিলা সদস্য নিয়োগে ‘দুখতারান-ই-ইসলাম’ নামে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এবার ৫০০ টাকা ‘অনুদানে’র বিনিময়ে অনলাইনে জেহাদের পাঠ দেওয়া শুরু করল মাসুদের সংগঠন। এই মহিলা ব্রিগেডের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাসুদ আজাহারের বোন সাদিয়া আজাহার।
অপারেশন সিঁদুরে সাদিয়ার স্বামী ইউসুফের মৃত্যু হয়। জানা গিয়েছে, মাসুদের ঘোষণা মাফিক, জামাত উল মোমিনাতে মহিলাদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই অনলাইন ক্লাসগুলি ৪০ মিনিটের এবং প্রতি অংশগ্রহণকারীকে ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে।৮ অক্টোবর থেকে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর, মুলতান, সিয়ালকোট, করাচি, মুজফফরাবাদ এবং কোটলি অঞ্চলের মহিলারা জইশের সদর দফতর মার্কাজ উসমান-ও-আলিতে নিয়োগের জন্য আসছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মহিলাদের র্যাডিক্যালাইজ করে ভবিষ্যতে আইএসআইএস , হামাস বা এলটিটিইর ধাঁচে মহিলা ব্রিগেড তৈরি করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
এই সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে ভারতীয় গোয়েন্দারা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। সম্প্রতি দিল্লির গাড়ি বিস্ফোরণের তদন্তেও এই মহিলা শাখার নাম উঠে এসেছে। এই ঘটনায় ধৃত শাহিন সইদ, যার কাছ থেকে বিপুল বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল, তার সঙ্গে 'জামাত-উল-মোমিনাত'-এর যোগ পাওয়া গেছে। পাকিস্তানের মাটিতে গড়ে ওঠা এই মহিলা ব্রিগেডের দ্রুত বৃদ্ধি ভবিষ্যতে ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।