শম্পি চক্রবর্তী পুরকায়স্থ
২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক আঙিনায় শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ হয়ে উঠল ধর্মতলা। তৃণমূল কংগ্রেসের সংহতি দিবস উপলক্ষে শনিবার মেয়ো রোডে আয়োজিত সভায় উপস্থিত রয়েছেন দলের ছাত্র-যুব সংগঠন, সংখ্যালঘুদের তরুণ প্রতিনিধিসহ বিশিষ্ট নেতানেত্রীরা। অনুষ্ঠানের আগেই এলাকাজুড়ে উপচে পড়া ভিড় এবং তৃণমূল শিবিরের জমজমাট প্রস্তুতি নজর কাড়ছিল।
সকাল থেকেই মেয়ো রোড, নিউ রোড এবং সংলগ্ন এলাকা তৃণমূলের পতাকায় ছেয়ে যায়। মঞ্চে একে একে হাজির হন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ একাধিক নেতা। ছাত্র পরিষদ, যুব তৃণমূল, এবং সংখ্যালঘু সেলের প্রতিনিধিদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সংহতি দিবসকে দল ভবিষ্যতের ‘মেগা স্যাটারডে’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
সভায় পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংহতির বার্তায় আপ্লুত করেন সমাবেশকে। তাঁর কথায়, “বাংলার মাটি একতার মাটি। এই মাটি কখনও বিভেদের কাছে মাথা নত করেনি।” তিনি আরও বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার, এই মূল্যবোধই বাংলা ও বাংলার মানুষের সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি।” মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা প্রবলভাবে প্রতিধ্বনিত হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি মঞ্চে উপস্থিত নেতারা কেন্দ্রের নীতির বিরোধিতা এবং রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজের কথা তুলে ধরেন। সংহতি দিবসে বক্তৃতায় বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রী শিক্ষাঙ্গন থেকে সমাজের প্রতিটি স্তরে ঐক্য রক্ষার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বাংলার মানুষ বিভেদ মানে না। আমরা একসঙ্গে থাকি, এগিয়ে যাই।” শশী পাঁজার কথায়, “তরুণ প্রজন্মের উদ্যোগেই এই সংহতির দাওয়াই আরও শক্ত হবে।”
সভাস্থলের বিশাল মঞ্চ থেকে ছাত্র-যুব সংগঠন ভবিষ্যতের কর্মসূচির কথাও ঘোষণা করে। তারা জানায়, নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পথসভার মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
এদিনের অনুষ্ঠানে সংখ্যালঘু সেলের তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা বিশেষভাবে নজর কাড়ে। তাদের উদ্যোগে বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের অংশগ্রহণে একতা ও ভ্রাতৃত্বের আবহ তৈরি হয়।
২০২৬-এর ভোটের আগে এই সংহতি দিবস তৃণমূলের রাজনৈতিক কৌশলে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতি এবং বিপুল জনসমাগম প্রমাণ করল যে আসন্ন নির্বাচনী লড়াইয়ের আগে সংগঠনকে আরও মজবুত করতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল।