কলকাতা
বাঙালির প্রিয় গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী শনিবার গভীর রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত প্রায় ২টো নাগাদ বুকে তীব্র অস্বস্তি অনুভব করতেই তাঁকে তড়িঘড়ি বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, হৃদযন্ত্রে সমস্যা ধরা পড়ায় জরুরি ভিত্তিতে বুকে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে। আপাতত ৬১ বছর বয়সি শিল্পীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে সতর্ক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে।
গত কয়েক দিন ধরে একের পর এক অনুষ্ঠানে ব্যস্ত ছিলেন নচিকেতা। টানা কাজের চাপ ও শারীরিক পরিশ্রমের ফলে তাঁর ধকল বাড়ছিল বলে সূত্রের খবর। শিল্পীর ঘনিষ্ঠ পরিবার-পরিজন জানিয়েছেন, আগে কোনও হৃদরোগের ইতিহাস ছিল না নচিকেতার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই খাদ্যনিয়ন্ত্রণ মেনে চলতেন তিনি। কিন্তু অনুষ্ঠানব্যস্ততার চাপে শরীর যে ক্লান্ত হয়ে পড়ছিল, তা হয়তো বুঝে ওঠার সুযোগ হয়নি।
রবিবার আসানসোলে নির্ধারিত অনুষ্ঠানটি বাতিল করতে বাধ্য হন নচিকেতা। আগামী কিছু দিনের সব অনুষ্ঠানও বাতিল করা হয়েছে। পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনও বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনী মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নচিকেতা। সেদিনও তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী, কড়া গলায় শিল্পীকে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। নচিকেতাও জানিয়েছিলেন যে তিনি খুব একটা খাদ্যরসিক নন, খেতে মন চায় না বলেই শরীরের ওজন কমে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শে কিউই ও ব্লুবেরির মতো পুষ্টিকর ফলও খাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।
অতএব, ব্যস্ততা, শরীরের চাপ ও নিয়মিত খাওয়াদাওয়ায় অনীহা, সব মিলিয়ে বিপদের মুখে পড়েন শিল্পী। ভক্তরা এখন প্রার্থনায়, দ্রুত সুস্থ হয়ে আবার মঞ্চে ফিরবেন নচিকেতা। সঙ্গীতের আকাশে তাঁর কণ্ঠস্বর আবার প্রতিধ্বনিত হওয়ার অপেক্ষায় গোটা বাংলা।