গুয়াহাটির পতিগৃহে অষ্টম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করলেন অভিনেত্রী পাওলি দাম ও স্বামী অর্জুন

Story by  atv | Posted by  Aparna Das • 2 d ago
গুয়াহাটির পতিগৃহে অষ্টম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করলেন অভিনেত্রী পাওলি দাম ও স্বামী অর্জুন
গুয়াহাটির পতিগৃহে অষ্টম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করলেন অভিনেত্রী পাওলি দাম ও স্বামী অর্জুন
 
শম্পি চক্রবর্তী পুরকায়স্থ 

বঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দাম ও তাঁর জীবনসঙ্গী অর্জুন দেব তাদের অষ্টম বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করলেন গুয়াহাটির পতিগৃহে। বিশেষ এই দিনে দু’জনের একান্ত সময় কাটানোর পাশাপাশি ছিল পরিবারের সঙ্গে উৎসবমুখর আয়োজন। অর্জুনের গুয়াহাটিস্থ বাড়িতে প্রতি বছরই এই দিনটি পালন করা হয়, তবে এইবারের উদযাপন আরও বেশি ঘরোয়া, আন্তরিক এবং পারিবারিক আবহে ভরা ছিল বলে জানা গেছে।
 
পাওলি ও অর্জুনের দাম্পত্যের আট বছর পূর্তি যেন নতুন করে স্মৃতিচারণার সুযোগ এনে দিল দুই পরিবারকেই। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে পাওলির সুসম্পর্ক বহুবারই প্রকাশ্যে এসেছে। ব্যস্ত শুটিং সূচি সত্ত্বেও পাওলি প্রায়ই সময় বের করে যান গুয়াহাটিতে। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক এবং সহজ মেলামেশার স্বভাব তাঁকে আদরের পুত্রবধূর মর্যাদা এনে দিয়েছে। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সময় কাটানো, স্থানীয় খাবারদাবার উপভোগ করা এবং গুয়াহাটির নৈসর্গিক পরিবেশে স্বস্তির শ্বাস নেওয়া, এই সবই পাওলির প্রায় প্রত্যেক গুয়াহাটি সফরের অঙ্গ।
 
অর্জুন দেব পেশাগতভাবে ব্যবসায়ী। তাঁর শৈশব-যৌবন কেটেছে অসমেই, তবে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি প্রথমে ইনদওর এবং পরে সান ফ্রান্সিসকো গিয়েছিলেন। বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে কিছু বছর সেখানেই কাজের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন অর্জুন। পরবর্তীতে পৈতৃক ব্যবসার দায়িত্ব পালন ও পরিবারকে সময় দেওয়ার লক্ষ্যে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি। দেশে ফিরে সক্রিয়ভাবে ব্যবসা সামলানোর পাশাপাশি তিনি যুক্ত হন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডেও।
 
পাওলি ও অর্জুনের সম্পর্কের শুরু ২০১৫ সালে কলকাতায় এক বিশেষ অনুষ্ঠানে। ইতালীয় কনসাল জেনারেলের আয়োজিত এক পার্টিতে প্রথম দেখা হয় তাঁদের। কলকাতার সাংস্কৃতিক মহলে আলোড়ন তোলা সেই পার্টিতেই শুরু হয় বন্ধুত্বের সূত্রপাত, যা পরবর্তীকালে রূপ নেয় প্রেমে এবং শেষে পরিণতি পায় বিয়েতে। দুই বছরের পরিচয়ের পর ২০১৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল সাদামাটা অথচ মার্জিত, যেখানে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
 
অষ্টম বিবাহবার্ষিকীর উদযাপনে পাওলি-অর্জুনের ঘনিষ্ঠদের মতে, দিনটি ছিল আবেগঘন এবং স্মৃতিমেদুর। সকালে বাড়ির পূজার পর শুরু হয় সরল আচার-অনুষ্ঠান। দুপুরে ছিল পরিবারের সঙ্গে বিশেষ মধ্যাহ্নভোজ। সন্ধ্যায় বাড়ির ছাদে আয়োজিত হয় কেক কাটা এবং ব্যক্তিগত উদযাপন। নিকট আত্মীয় ও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছাড়া আর কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। পাওলি নিজে জানান, “গুয়াহাটির বাড়িতে আমাদের প্রতিটি বছরই বিশেষ। এখানকার মাটির গন্ধ, পরিবারের আন্তরিকতা আমাদের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে।”
 
পাওলি দামের কর্মজীবন যেমন ব্যস্ত, তেমনই সফল। বাংলা চলচ্চিত্রে শক্তিশালী অভিনেত্রী হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি। পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও তাঁর অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত। অন্যদিকে অর্জুন ব্যবসায়িক ক্ষেত্রের পাশাপাশি জীবনের সরলতা এবং পারিবারিক মূল্যবোধকেই গুরুত্ব দেন। দু’জনের জীবনযাপন, পেশা ও ব্যক্তিত্ব আলাদা হলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়াই তাঁদের সম্পর্ককে সমৃদ্ধ করেছে।
 
গুয়াহাটিতে বার্ষিকী উদযাপন তাই শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং দুই পরিবারের একাত্মতার প্রতীক। শহরের নীরবতা, প্রকৃতি এবং পারিবারিক উষ্ণতা পাওলি-অর্জুন দম্পতির জীবনে এক বিশেষ অধ্যায় তৈরি করেছে। আট বছরের দাম্পত্য জীবনে এই উদযাপন যেন আরও একবার প্রমাণ করল, গ্ল্যামারের আড়ালে থেকেও বাস্তব জীবনের সম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ়, আরও আন্তরিক।